ফেরি ধরার তাড়া পাথরঘাটায় ইউএনওর গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক নিহত ও অপর একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় ইউএনও হুমায়ূন কবির গাড়িতে ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে বাইনচটকি-পাথরঘাটা সড়কের মধ্য বাইনচটকি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ইউএনওর গাড়ি চালক পালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র জানা গেছে, ‘ইউএনওর জন্য ঘাটে ফেরি অপেক্ষা করছিল, তাকে বহনকারী গাড়িটি তাই বেপরোয়া গতিতে ফেরিঘাটের দিকে যাচ্ছিল বলেই এই দুর্ঘটনা ঘটে’।
নিহত মোটরসাইকেল চালকের নাম বশির। উপজেলার কাকচিঁড়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামের খালেক পঞ্চায়েতের ছেলে। নিহত বশিরের তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মোফাজ্জেল হোসেন বশিরের মোটরসাইকেল আরোহী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফেরিঘাট থেকে মোফাজ্জেল নামের একজন প্যাসেঞ্জার নিয়ে পাথরঘাটার উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে বাইনচটকি এলাকায় পৌঁছালে অপর দিক থেকে পাথরঘাটার ইউএনওর গাড়ির সঙ্গে বশিরের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসে বশির ও মোফাজ্জেল হোসেনকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বশিরকে মৃত ঘোষণা করেন। মোফাজ্জেল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলের উপস্থিত বশিরের পরিচিত মনির নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ইউএনওকে বহন করা গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে বাইনচটকি ফেরিঘাটে যাচ্ছিল। গাড়িটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর মোটরসাইকেলটি ইউএনওর গাড়ির বাম্পারে আটকে যায়। ইউএনওর গাড়ির চালক ওই অবস্থায় গাড়ি না থামিয়ে ৩০-৪০ হাত দুরে টেনে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাসকিয়া সিদ্দিকা বলেন, হাসপাতালের নিয়ে আসার আগেই বশিরের মৃত্যু হয়। এছাড়াও অন্য আহত ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশাল প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত বশিরের বাবা খালেক পঞ্চায়েত বলেন, বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিল কাল জমি কেনার জন্য পাথরঘাটা নিয়ে যাবে আমাকে। ওর তিনটা মেয়ে আছে ওদের কি হবে। ওরা কাকে বাবা বলে ডাকবে? বশিরের বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল বলেও জানান তিনি।
এদিকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে গিয়ে নিহত ও আহতদের খোঁজ খবর নিয়েছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। তিনি বলেন, নিহতের পরিবারকে আমরা সহায়তা করব । এ ছাড়া গুরুতর আহত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে। নিহত আহত সকলের খোঁজ খবর রাখছি, প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা করা হবে।