মঠবাড়িয়া বিদেশ যাবার টাকা না দেয়ায় গৃহবধূকে ৩দিন ধরে নির্যাতন

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

মঠবাড়িয়া বিদেশ যাবার টাকা না দেয়ায় গৃহবধূকে ৩দিন ধরে নির্যাতনমোঃ মনির আকন, মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি :
বিদেশে যাবার জন্য তিন লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে আটকে নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পরে আহত গৃহবধূকে হাসপাতালে না নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে শালিসীর কথা বলে তার পরিবারের লোকজনকে খবর দেয় গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ির লোকজন ।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে আহত গৃহবধূকে ইউনিয়নর পরিষদ থেকে উদ্ধার করে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্বজনরা।

মঠবাড়িয়া উপজেলার সবুজনগর গ্রামের আলী হোসেনের মেয়ে গৃহবধূ মিতু আক্তার(১৯) গত দুইদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন ।

নির্যাতিত গৃহবধূ মিতুর মা পাখি বেগম অভিযোগ করেন, গত ছয়মাস আগে পারিবারিক সম্মতিতে পার্শ্ববর্তী বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের কড়ইতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসি মো. জাহাঙ্গীর আকনের ছেলে মো. জাহিদ আকনের সাথে মিতুর আনুষ্ঠাািনক বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর পক্ষের সকল দাবি দাওয়া পূরণ করে কণে পক্ষ। সেই সাথে বিয়ের সময় স্বামী জাহিদ ঢাকায় চাকুরি করেন এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে এ বিয়ে করে। বিয়ের পর বেকার জাহিদ নানা ভাবে স্ত্রীকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। স্বামী জাহিদের পিতা সৌদি প্রবাসি । গত ১৫দিন আগে সে বাড়িতে আসলে মিতুর পরিবারকে দাওয়াত দিয়ে তাদের বাড়িতে নেন। এরপর দুই পরিবারের বৈঠকে মিতুর স্বামীকে বিদেশ পাঠানোর কথা ওঠে। সেখানে বিদেশ যাওয়ার জন্য তিন লাখ টাকা দাবি করেন স্বামী জাহিদের পরিবার। মিতুর পরিবার এ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর থেকেই স্বামী ও পরিরারের লোকজন গৃহবধূ মিতুর ওপর নির্দয় আচরণ শুরু করে। গত মঙ্গলবার রাতে জাহিদ তার স্ত্রীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্দয়ভাবে পেটায় । সাত দিনের মধ্যে টাকা না দিলে জানে মেরে ফেলবে এমন হুমকী দেয়। এ নির্যাতনে গৃহবধুর শ্বাশড়ি কনক বেগম ও ননদ শেফালি আক্তারও অংশ নেয়। গৃহবধূ গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি না করে তার পরিবারের কাছে শালিসীর কথা বলে বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়ন পরিষদে আসতে খবর দেন। মিতুর পরিবারের স্বজনরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে মিতু গুরুতর আহত অবস্থায় দেখেন।

এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিতুকে তার পরিবারের কাছে তুলে দিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। পরে মিতুকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোনিয়া আক্তার বলেন, গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটুনীর দাগ রয়েছে। তাকে মারধর করা হয়েছে। চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে । সে শারিরীক ও মানসিক অসুস্থ । সুস্থ হতে কয়েকদিন সময় লাগবে।

আহত মিতুর ভাই মনির হোসেন জানান, বোনের এমন নির্যাতনে আমরা ভিষণ কষ্টে আছি । এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)