পাথরঘাটার কারিগররা লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত (ভিডিও সহ)

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ১২:৪৫ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১২:৪৬ পিএম, ২১ নভেম্বর ২০১৯


বরগুনার পাথরঘাটায় গ্রামীন জনপদে শীতের আগমনকে শুরু করে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে গ্রামের বিভিন্ন পরিবারে পড়ে গেছে কাঁথা সেলাইয়ের ধুম। ক্রেতাদের আনাগোনায় ক্রমশ জমজমাট হয়ে উঠছে লেপ-তোষকের দোকানগুলো। দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা আর সাতসকালে ঘাসের ওপর জমে থাকা শিশিরবিন্দু জানান দেয় শীত এসে গেছে।

সরেজমিনে পাথরঘাটা পৌরশহরে বাজারে গিয়ে গুরে দেখা গেছে, লেপ-তোষকের দোকানের প্রায় সব গুলোতে এখন অর্ডার দিতে আসা ক্রেতাদের ভিড়। দোকানিরা অর্ডার গ্রহন এবং বিভিন্ন রঙের কাপড় ও তুলা দেখাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। যেন কোন কথা বলার সময়নেই কারো।

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লেপ-তোষক তৈরীতে ব্যস্ত দোকান গুলোর কারিগররা। লেপ তৈরীতে লাল মার্কিন সুতি কাপড়, থান কাপড় এবং শিমুল তুলা, পলি তুলা ও কালো তুলা ব্যবহার করছেন। ব্যস্ততা এমন যেন দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের।

কারিগর আব্দুর রহিম পাথরঘাটা নিউজকে জানায়, কিছু দিন আগে থেকেই ভোরের হালকা কুয়াশায় শীতের আমেজ বিরাজ করছে। এতেই লেপ তৈরির অর্ডার বেড়ে গেছে। একজন কারিগর প্রতিদিন গড়ে ডাবল ৫ থেকে ৬টি নতুন লেপ তৈরি করতে পরে। শিত শুরু হয়েছে আর অর্ডারও আসতে শুরু হয়েছে। শিত আসলেই আমাদের কাজ বেড়ে যায়।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে আসা কারিগর আকসানুর সিকদার, রমজান ও রুমান পাথরঘাটা নিউজকে জানান, শীতের শুরুতেই আমরা বিভিন্ন অঞ্চলে লেপ-তোষক তৈরির জন্য মওসুমি কারিগর হিসাবে যাই, প্রতিদিন দুজন কারিগর ৬ থেকে ৮ টি নতুন লেপ তোষক তৈরি করতে পারি। এ ৮টি লেপ-তোষক বিক্রি করতে পারলে মজুরী ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা পাই।

পৌরশহরের জামান বেডিং এর মালিক নুরুজ্জামান, খাঁন বেডিং এর মালিক হাচান খাঁন পাথরঘাটা নিউজকে জানান, রেডিমেট সেমি-ডবল এ দাম ৮শ থেকে ১হাজার টাকা, ডবল লেপ পাওয়া যাবে ১হাজার থেকে ১২শ টাকার মধ্যে। এছাড়া শুধু রেডিমেটই নয়, ক্রেতারা তাদের পছন্দমত লেপ কারিগর দিয়ে তৈরী করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে ক্রয় করতে পারবেন। তুলার মান ও পরিমানের ওপর নির্ভর করে লেপ তৈরির খরচ। একটি ডবল লেপ বানাতে তিন থেকে চার কেজি তুলা লাগে। আর লেপ বানাতে সাধারন শিমুল তুলা ও কার্পাস তুলা ব্যবহার করা হয়। তাছাড়াও এবছর জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাবাভিকভাবেই লেপ-তোষক তৈরীতে খরচ দেড় থেকে ২শ টাকা বেড়েছে। আর একটি লেপ বিক্রি করে প্রায় ২শ টাকা ৩শ টাকা পর্যন্ত লাভ হয় তাদের। শুধু লেপ-তোষক তৈরীই নয়, শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদ ও ব্যবহার্য সামগ্রীতেও পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। কদর বাড়তে শুরু করেছে গরম পোশাকের।

তারা আরও জানান, এমনিতেই এবছর ব্যাবসা আগের থেকে মন্দা যাচ্ছে। মওসুমি ব্যাবসায়ীরা দুর থেকে এসে খুব অল্প দামে লেপ-তোষক বিক্রি করে, আমরা সে দামে কিনতেও পারিনা। এই মওসুমি ব্যাসায়ীদের কারনেই আমাদের ব্যাবসা মন্দা যাচ্ছে।

এছাড়া শীতের সময় কাথাঁ, কম্বল, চাদর, শীতের টুপি, হাতমোজা, মাফলার, জাজিম ও কার্পেটের বিক্রি করতে দেখা গেছে দোকানীদের।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)