এখনও ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন উপকূলবাসীর ” বেরিবাঁধ না থাকায় পাথরঘাটায় ৫শ একক জমি নদীগর্ভে বিলীন
="accelerometer; autoplay; encrypted-media; gyroscope; picture-in-picture" allowfullscreen>
আজ ভয়াল স্মৃতিবিজড়িত ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের এই দিনে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল স্মরণকালের ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় সিডর, যা আজও ভুলতে পারেনি ওসব এলাকার মানুষ। সিডরের আঘাতে সর্বস্ব হারিয়ে যাওয়া আলমগীর ফকিরের পরিবার এখনও স্বপ্ন দেখে নদীতে বিলীন হওয়া পৈতৃক জমিটুকু ফিরে পাওয়ার। এই স্বপ্ন শুধু আলমগীর ফকিরের একার নয়। ১২ বছর ধরে একই স্বপ্ন আব্দুর রহমান, বেলায়েত, মতি মাস্টার, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর, কবির খানসহ শতাধিক পরিবারের।
মহাপ্রলয়ঙ্করী সিডরে বঙ্গোপসাগরের মোহনা বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলা পদ্মা রুহিতা এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙেই আব্দুর রহমানের পরিবারের ১১ ও জাকির হাওলাদারের পরিবারের ৭ জনসহ ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে সিডরের স্রোত ঢুকে কয়েকশ বাড়িঘর, মানুষসহ প্রাণী সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় অথৈ সাগরে। যারা পানির স্রোতের মধ্যে পড়েছে তাদের অনেককে আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকের লাশ পাওয়া গেছে ৩০-৪০ মাইল দূরে নদীর পাড়ের বালু ও মাটির মধ্যে। রেড ক্রিসেন্টের তথ্যমতে, সিডরে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারের অধিক। বিভীষিকাময় সেই আতঙ্ক এখনও দাপিয়ে বেড়ায় উপকূলবাসীর মনে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বকর সিদ্দিক মেম্বার জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ওই এলাকার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ বিষয়ে প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। যা নিচ্ছে তাও আবার দায়সারা গোছের।
পাথরঘাটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী খলিলুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের জন্য সরকারের কাছে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নেদারল্যান্ডসের একটি প্রতিনিধিদল পাথরঘাটার বেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে গেছে। দুয়েক বছরের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপকূলীয় দুর্গম এলাকায় বিদ্যুৎসহ নানা সুযোগ-সুবিধা থাকলেও নেই জীবন রক্ষার বেড়িবাঁধ। তাদের দাবি সিডর পরবর্তীতে এখন পর্যন্ত নদীতে পদ্মা ও রুহিতা গ্রামের ৫০০ একর জমি বিলীন হয়ে গেছে। বরগুনা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, সিডরের সময় সাগরে ৩৭৫টি ফিশিং ট্রলার নিখোঁজ হয়। এ ছাড়াও পাথরঘাটার শতাধিক জেলে এখনও নিখোঁজ।
উপকূলবাসী ও জেলে সম্প্রদায়ের দাবি, প্রতিবছর ১৫ নভেম্বর যেন সরকারিভাবে সিডর দিবস পালন করা হয়। তাদের মতে, এ দিনটিকে একটি জাতীয় দুর্যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা উচিত।