ত্রাণ চাইনা শক্ত বেরিবাঁধ চাই
="accelerometer; autoplay; encrypted-media; gyroscope; picture-in-picture" allowfullscreen>
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ো হওয়ায় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পাঁচ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ও ৫০০টির মতো ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় তিন শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহতদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও রয়েছেন। বুলবুল পরবর্তী উদ্ধার কাজে ৫ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ ৫০ আহত হয়েছে।
রোববার ভোররাত আড়াইটার দিকে ঝড়ো ও ধমকা হাওয়া বইতে শুরু করলে সকাল ৭টার দিকে তা প্রবলভাবে আঘাত করে। এতে উপজেলার প্রায় ৫০০ টি ঘর বিধ্বস্ত এবং পাঁচ হাজার পাকা-আধাপাকা ঘরের চালা উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। তবে প্রাথমিক ভাবে সরকারি হিসেব মতে ২২৫ টি ঘর বিধ্বস্ত ও ২০০০ ঘরের আংশিক ক্ষয়ক্ষতির তালিকা হাতে এসেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এঘটনায় শনিবার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিছিন্ন রয়েছে।
অপরদিকে পাথরঘাটা কলেজ এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম খোকনের ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় তিনি আহত হন। এ সময় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে তার শিশু সন্তানসহ স্ত্রী।
খোকনের স্ত্রী মুন্নি জানান, তারা ঘরের মধ্যে অবস্থান করছিলেন, এমন সময় বিকট শব্দে তাদের বসতঘরের ওপর কড়াই গাছ এসে পড়ে। তখন তারা স্টিলের আলমারির পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে প্রাণ বাঁচান। পরে স্থানীয়রা এসে তাদের ঘর থেকে বের করেন।
পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে পাথরঘাটায় ব্যপকভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
এদিকে সোমবার দুপুরে ঘুর্নিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত পাথরঘাটা উপজেলার জিনতলা এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কালে বেরিবাঁধ এলাকার গেলে ঐ এলাকার বাসিন্দারা জানান, আমরা ত্রাণ চাইনা শক্ত বেরিবাঁধ চাই।
জিনতলা এলাকায় জাবের খান, আকলিমা, হলুফা, জানান বেরিবাঁধ এলাকার ৩শ পরিবার পরিবার স্থায়ী বেরিবাঁধ না থাকায় প্রতিটি মুহূর্ত আতংকে আছি। সরকার ত্রাণ দিয়ে যায় একবার আর আমাদের বাকি দিন থাকতে হয় হাঁপিয়ে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে বিষখালী ও বলেশ্বর নদী বেষ্টিত উপকুলীয় বরগুনার পাথরঘাটার অনেক অংশই নেই স্থায়ী বেরিবাঁধ। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে পাথরঘাটা কয়েক লাখ মানুষ। দেখা যায় কাকচিড়া , কাঠালতলী, চরলাঠিমারা, জিনতলা, পদ্মা, রুহিতা এলাকায় মানুষ গুলো রয়েছে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় জিনতলা, চরলাঠিমারা, পদ্মা ও রুহিতা গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এর আগে কয়েক বছরে সিডর, আয়লা, মহাসেনের আঘাতে বারবার ভেঙে গেছে ঐ স্থানগুলো।
ঘুর্নিঝড় বুলবুলের সংবাদ শুনে পদ্মা ভাঙন এলাকা থেকে চার কিলোমিটার দূরে পাথরঘাটা পৌর এলাকার কেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে আসা সালেহা বেগম জানান, পদ্মা ভাঙন নামক এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার দুর্বল হওয়ার কারণে তিনি সহ শতাধিক মানুষ পায়ে হেঁটে পাঁচ কিলোমিটার দূরে এসে এই আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
এবিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, পদ্মা ভাঙন এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম। পদ্মা ব্রাক সাইক্লোন শেল্টারটি ফাটল দেখা দেয়ার কারণে সেখানকার লোকেরা আতংকিত হয়ে দূরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি আরো জানান আমরা ওয়াল্ড ব্যাংকের সহায়তায় অতি শীঘ্রই স্থায়ী বেরিবাঁধ নির্মাণ শুরু করা হবে।