বরগুনার জোছনা উৎসব কী, কেন এবং কীভাবে আসবেন?
শহুরে সভ্যতায় হয়তো পেয়েছেন আপনি অনেক কিছু। কিন্তু হারিয়েছেন কী- কখনো কি ভেবে দেখেছেন! শ্রাবণের জলে সর্বাঙ্গ ভিজিয়েছেন কবে সর্বশেষ- মনে পড়ে!
শরত-শিশিরে নগ্ন পায়ে হেঁটেছেন কবে সেই স্মৃতি জানি ভুলেই গেছেন! মোম-জোছনায় চোখ-মন ভরানো হয় না কতকাল তা আপনার চেয়ে ভালো আর কে জানে! তাইতো আমাদের এই আয়োজন, “জোছনা উৎসব”।
ত্রিমোহনার রূপালি জলরাশি ঘেঁষে বিস্তীর্ণ সৈকতে বসে হৈমন্তী পূর্ণিমা দেখে আপনি শিহরিত হবেনই। জোছনাপাগল হাজারো মানুষের সাথে গান, কবিতা, পুঁথি, জারি সারি শুনে/শুনিয়ে মুগ্ধ আপনাকে হতেই হবে।
এবারে বরগুনার প্রধান তিনটি নদী পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর যেখানে সাগরে মিশেছে ঠিক সেখানে; নবগঠিত তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের স্নিগ্ধ বেলাভূমি- ‘শুভসন্ধ্যার’ বিস্তীর্ণ বালুচরে পঞ্চমবারের মত এ উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
একদিকে সীমাহীন সাগর; আরেকদিকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট টেংরাগিড়ি। একদিকে দীর্ঘ ঝাউবন, তিন তিনটি নদীর বিশাল জলমোহনা; আরেকদিকে সীমাহীন সাগর। সবমিলিয়ে নদ-নদী আর বন-বনানীর এক অপরূপ সমাহার- শুভ সন্ধ্যা সৈকত! আসছে পূর্ণিমায় এখানেই জলজোছনায় একাকার হবে জোছনাবিলাসী হাজারো মানুষ।
অভিজ্ঞতা আর স্মৃতিকে সমৃদ্ধ করতে প্রিয় স্বজনদের নিয়ে চলে আসুন ১৩ নভেম্বর তালতলীর শুভসন্ধ্যা সৈকতে, বরগুনার জোছনা উৎসবে।
কীভাবে আসবেন জোছনা উৎসবে
জোছনা উৎসবের জন্য নলবুনিয়া শুভসন্ধ্যা’র উদ্দেশে বরগুনা থেকে একাধিক লঞ্চ ছেড়ে যাবে ১৩ নভেম্বর বুধবার সকাল ১১টায়। কেবিন ভাড়া সিঙ্গেল-১,২০০/- ডাবল-২,০০০/- ডেক-৩০০/-(আসা-যাওয়া) বরগুনা থেকে “শুভ সন্ধ্যা” যেতে সময় লাগবে কমবেশি তিন ঘণ্টা।বরগুনার নদী বন্দর (লঞ্চঘাট) থেকে ১৩ নভেম্বর বুধবার সকাল ১১টায় তালতলীর শুভসন্ধ্যা সৈকতের উদ্দেশ্যে দু’টি দ্বিতল লঞ্চ ছেড়ে যাবে।
বরগুনা
বরগুনা থেকে যারা যাবেন তারা লঞ্চের বুকিং দেয়ার জন্য (বাবুল লাল ঘোষ- নাজির, বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়- ০১৭১৪৯০৬৬৮১) এবং ( পলাশ লস্কর, অফিস সহকারী, সহকারী কমিশনার ভূমি এর কার্যালয় বরগুনা-০০১৭৩৭৩৭৪৪২৪) এই দু’টি নম্বরে ফোন দিয়ে লঞ্চের কেবিন বুকিং দিতে পারেন।ডাবল কেবিন ২০০০ টাকা। সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা। ডেক ৩০০ টাকা। সিঙ্গেল, ডাবল কেবিন এবং ডেকের প্রতিজন যাত্রীর জন্য প্যাকেট লাঞ্চ সরবরাহ করা হবে।
লঞ্চে কেবিন সংখ্যা একেবারেই সীমীত। কেবিন না পেলেও কোন সমস্যা নেই। সাথে মাদুর আর বিছানার চাদর আনলে আপনি কেবিনের চেয়ে অনেক বেশি সাচ্ছন্দে যেতে পারবেন। দল বেঁধে আড্ডা আর কোরাস গানের সাথে সাথে আপনি মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যে পেঁছে যাবেন শুভসন্ধ্যার স্নিগ্ধ সৈকতে।
আমতলী
আমতলী লঞ্চঘাট থেকে ১৩ নভেম্বর বুধবার সকাল ১১টায় তালতলীর শুভসন্ধ্যা সৈকতের উদ্দেশ্যে একটি দ্বোতলা লঞ্চ ছেড়ে যাবে।আমতলী থেকে যারা যাবেন তারা লঞ্চ বুকিং দেয়ার জন্য (মোঃ মজিবুর রহমান, নাজির, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় আমতলী- ০১৭৯২২৫৩৫৮৬) এই নম্বরে ফোন দিয়ে লঞ্চের বুকিং দিতে পারেন।
ডাবল কেবিন ২০০০ টাকা। সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা। ডেক ৩০০ টাকা। ডাবল কেবিন এবং ডেকের প্রতিজন যাত্রীর জন্য প্যাকেট লাঞ্চ সরবরাহ করা হবে।
লঞ্চে কেবিন সংখ্যা একেবারেই সীমীত। কেবিন না পেলেও কোন সমস্যা নেই। সাথে মাদুর আর বিছানার চাদর আনলে আপনি কেবিনের চেয়ে অনেক বেশি সাচ্ছন্দে যেতে পারবেন। দল বেঁধে আড্ডা আর কোরাস গানের সাথে সাথে আপনি মাত্র তিন ঘন্টার মধ্যে পেঁছে যাবেন শুভসন্ধ্যার স্নিগ্ধ সৈকতে।
এছাড়া পাথরঘাটা থেকে যারা যাবেন তারা লঞ্চ_বুকিং দেয়ার জন্য পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নাজির আব্দুল্লাহ আল মামুন- (০১৭১৪৭২৭৯২৩) এর সাথে যোগাযোগ করবেন।
লঞ্চ শুভসন্ধ্যায় ভেড়ার পর আর কেউ লঞ্চে অবস্থান করতে পারবেন না। লঞ্চ নদীর মাঝখানে চলে যাবে। সুতরাং অতটাকা কেবিন ভাড়া দিয়ে কেবিনে যাওয়ার চেয়ে সাধারণ আসনের টিকেট কেটে দল বেঁধে ডেকে যাওয়াটাই হবে অনেক বেশি আরাম দায়ক বলে মনে করছেন অধিকাংশ জোছনা সারথীরা।
বরগুনা থেকে যারা লঞ্চ মিস করবেন তারা কীভাবে যাবেন?
১. সড়কপথে বাস/মটরবাইকে গোলবুনিয়া, চালতাতলী, লতাকাটা হয়ে ট্রলারযোগে তালতলী।
২. তালতলী থেকে ভাড়ায় চালিত মটরবাইকে নলবুনিয়া “শুভসন্ধ্যা” সৈকত (ভাড়া জনপ্রতি ৫০/-টাকা)
পটুয়াখালী থেকে কীভাবে যাবেন?
১. বাসযোগে সরাসরি তালতলী (ভাড়া-১৫০/-)
২. তালতলী থেকে মটরবাইকে নলবুনিয়া “শুভ সন্ধ্যা” সৈকত (ভাড়া জনপ্রতি-৫০/-)
বরিশাল থেকে কীভাবে যাবেন?
১. রূপাতলী স্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে সরাসরি তালতলী (ভাড়া-২০০/-)
২. তালতলী থেকে মটরবাইকে নলবুনিয়া “শুভসন্ধ্যা” সৈকত (ভাড়া জনপ্রতি -৫০/-)
ঢাকা থেকে কীভাবে যাবেন?
ঢাকার গাবতলী এবং সায়েদাবাদ থেকে সরাসরি বরগুনার উদ্দেশ্যে সকালে এবং বিকেলে বাস ছেড়ে আসে। ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। তাছাড়া ঢাকা সদরঘাটা থেকে প্রতিদিন বিকেল ৫টায় এবং ছয়টায় দু’টি দোতলা লঞ্চ ছেড়ে আসে। ভাড়া ডেক ৩০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা এবং ডাবল কেবিন ২২০০ টাকা।(সংগ্রহীত)