আগৈলঝাড়ায় শ্বশুর-শাশুড়িকে নির্যাতনের অপরাধে পুত্রবধূর কারাদণ্ড
বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে খাবার না দেওয়া, ঘর থেকে বের করে দেওয়া ও মারধর করায় পুত্রবধূ মনিকা বৈরাগীকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে বরিশালের আগৈলঝাড়ার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও বিপুল চন্দ্র দাস এ সাজা দেন।
মনিকার শ্বশুর ভবসিন্ধু বৈরাগী বলেন, ‘ছয় মাস ধরে আমাকে ও আমার স্ত্রী বিমলা অধিকারীকে ঘরের বারান্দায় থাকতে দেয় মনিকা। আমাদের তিনবেলা খাবারও দেয় না। রান্নাঘরে রান্না করতে গেলে গালাগাল শুরু করে। এছাড়া আমাদের মারধরও করে। আমরা যতক্ষণ ঘরের বারান্দায় থাকি ততক্ষণ আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। বিষয়টি আমার ছেলে খোকন জানলেও সে বউয়ের ওপর কোনও কথা বলতে পারে না। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলছে। খাবার না দেওয়ায় শামুক সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে যা পাই তা দিয়ে কোনোমতে আমাদের দু’জনের চলে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘খাবার না দিলে আমার কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু মনিকা এখন আমাদের ঘর থেকে বের করতে উঠেপড়ে লেগেছে। এ কারণে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে সে। আমরা এখন কোথায় যাবো? তাই লিখিতভাবে বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানাই।’
ইউএনও বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, ‘২৩ অক্টোবর ভবসিন্ধু বৈরাগীর লিখিত অভিযোগ পাই। এরপর মনিকাকে অফিসে আসতে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি আসেননি। এ কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সমাজসেবা কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের নিয়ে ভবসিন্ধুর বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে তার অভিযোগ শুনি। এসময় মনিকা বাড়িতেই ছিলেন। তাদের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করি। কিন্তু মনিকা কোনোভাবেই তা মেনে নিতে পারেননি। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার পরও মনিকাকে নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হই।
এরপর তাকে আটক করে কার্যালয়ে নিয়ে আসি। সেখানে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মনিকা অকপটে স্বীকার করেন। পরে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে আগৈলঝাড়া থানায় রাখা হয়। আগামীকাল বুধবার বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৃদ্ধ দু’জনকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে কোনও ধরনের খারাপ ব্যবহার কিংবা ঘর থেকে নামিয়ে দিতে চাইলে আমাকে অবহিত করতে বলেছি।’