পাথরঘাটায় কারেন্ট শর্ট দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা
বরগুনার পাথরঘাটায় স্বামী ও সতীন মিলে মোসা. মহিমা বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূকে নির্মম নির্যাতন করে বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে এ ঘটনায় বাবা কবির তালুকদারকে প্রধান আসামী করে তিন জনের বিরুদ্ধে পাথরঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ছেলে হেলাল তালুকদার।
মামলার অন্য আসামীরা হলো, কবির তালুকদারের দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচি বেগম ও বোন জামাই মো. সুজন।
এর আগে গত শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ নির্মম নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটে। মৃত মহিমা বেগম বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের হোগলপাতি গ্রামের মৃত মকবুল মিস্ত্রীর কন্যা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রায়হানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মাজেদ তালুকদারের ছেলে কবির তালকুদার, তার দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচি বেগম ও কবিরের মেয়ের জামাই সুজন পুর্ব পরিকল্পিতভাবে কবির তালুকদারের বসত ঘরে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে প্রথম স্ত্রী মহিমা বেগমের শরীরে বিদ্যুত লাগিয়ে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা বসত ঘরের পাশে একটি গাছের হেলান দিয়ে টিন দিয়ে লাশ আটকিয়ে দেয়। পরে পুলিশ ঘটনা শুনে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। ময়না তদন্ত শেষে শনিবার মহিমার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় নয় বছর আগে কবির তালুকদারের মেয়ে রেখা আক্তারের সাথে এলাচি বেগমের ছেলে সুজনের বিবাহ হয়। বিবাহের পর বাবা কবির তালুকদারের সাথে রেখার শাশুড়ি এলাচি বেগমের পরকিয়া সম্পর্কের এক পর্যায়ে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এ ঘটনা রেখা আক্তার দেখে ফেললে বাবার উপর অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যা করে। রেখা আক্তারের মৃত্যুর কয়েকদিন পরই কবির তালুকদার এলাচি বেগমকে দ্বিতীয় বিবাহ করে।
মামলার বাদি ও নিহতের বড় ছেলে হেলাল তালুকদার জানান, ঘটনার দিন সকালে বাবা কবির তালুকদার জানায় যে, আমার শ্বশুর খুব অসুস্থ, কৌশল করে এই কথা বলে আমার ছোট ভাই দুলাল তালুকদার ও আমার স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত শ্বশুর বাড়ি কালমেঘায় যাই। যাওয়ার পরেই পুর্ব পরিকল্পিতভাবেই আমার মাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা গোপন করতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার করেছে।
ঘটনা নিশ্চিত করে পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ঘটনার শোনামাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। মামলার ভিত্তিতে প্রধান আসামী কবির তালুকদারকে আটক করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের আটক করার জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে।