মঠবাড়িয়ায় মুখোশ পড়ে হাত-পা বেধে গৃহবধুকে অমানুষিক নির্যাতন, এক সপ্তাহেও কাউকে আটক করেনি পুলিশ
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মুখোশ পড়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে জোর পূর্বক ঘরে ডুকে এক গৃহবধূকে হাত-পা ও মুখমন্ডল বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন, শ্লীলতাহাণীর ঘটনার আট দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
আহত ওই গৃহবধু এ ঘটনার পর থেকে খুলনা আড়াইশ বেড হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
দিনের বেলায় এ দুধর্ষ ঘটনার পর আবারো হামলার আশংকায় ওই পরিবারের সদসেদের মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক বরাজ করছে।
আহত ওই গৃহবধূর স্বামী উপজেলার আলগী পাতাকাটা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান-গত শনিবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তাঁর বাগানের সুপারি চুরি হয়। খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে নামাজ শেষে বসত ঘর সংলগ্ন পুকুরে এক বস্তা সুপারী ভাসতে দেখে ওই সুপারী তুলে ঘরে রেখে মাকে নিয়ে শৌলা গ্রামে এক অসুস্থ অত্মীয়কে দেখতে যাই। এর কিছুক্ষন পর তার বাবা হাজী ইসমাইলও তার স্ত্রী হাসিনাকে ঘরে রেখে নিকটবর্তী আলগী বাজারে যায়।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে তার স্ত্রী দু সন্তানের জননী হাসিনা বেগম(৩৫) একাকী ঘরে রান্নার জন্য তরকারী কুটছিলো। এমন সময় পার্শবর্তী বাদুরা গ্রামের হাবিব খাঁর পুত্র মিন্টু (৩২) ও নাজেম হাওলাদারের ছেলে হাবিব(৪২) গেঞ্জি ও গামছা দিয়ে মুখোশ বাঁধা অবস্থায় জোর পূব্বর্ক ঘরে প্রবেশ করে তার স্বামী ও সুপারীর কথা জিজ্ঞেস করে। তার স্ত্রী কিছু জানে না বলে তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করে ডাক চিৎকার শুরু করে। কিছু বুজে ওঠার আগেই ঘরে থাকা লোহার রড দিয়ে এ দু’ যুবক স্ত্রীকে এলোপাতারি পিটান শুরু করে। এক পর্যায় হাসিনার ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে একাধিক আছাড় দিয়ে ও এলোপাতারি আঘাত করে।এতে তার স্ত্রী মারাত্মক আহত হয় ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
খবর পেয়ে বাড়িতে এসে ওইদিন দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। হাসপাতালে তিন দিন চিকিৎসা নিলেও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা ২শ’৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় ওইদিন রাতে মিন্টু, হাবিব ও প্রবাসী চাচাত ভাই মনিরের স্ত্রী বেবীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
চিকিৎসাধীন নাসিমা বেগম মুঠোফোনে বলেন, ওরা ঘরে আমাকে একা পেয়ে নির্দয় ভাবে টেনে হেচরে তান্ডব চালালে লোহার রডের আঘাতের আমি জ্ঞান হারাই। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা দুধর্ষ ও দস্যু প্রকৃতির। এদের বিরুদ্ধে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। ফলে আমরা নিরাপত্তা হীনতার মধ্যে আছি।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, প্রকাশ্যে এ ধরনের ঘটনা অনাকাংক্ষিত। ঘটনা শোনার পর পরই আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশকে অবহিত করি।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসাহাক আলী আকন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতরা দুধর্ষ। তিনি তাদের দৃষ্টন্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন।
মঠবাড়িয়া থানার সাব ইন্সপেক্টটর হাবিবুর রহমান এ বিষয় লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাদী যোগাযোগ না করায় পরবর্তী কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।