পথরঘাটায় মাদক ছেড়ে বনে কেওড়া গাছ ও ফল পাচারের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বাইজিদ
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার হরিনঘাটায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বায়জিদসহ এলাকার সংঘবদ্ধ একটি চোর চক্র। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি গাছপাচার করে আসলেও তাদের প্রতিরোধে নেওয়া হচ্ছেনা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এতে ক্রমেই ধ্বংস হচ্ছে দেশের দক্ষিনাঞ্চলের পাথরঘাটার হরিনঘাটা বনসহ বিহঙ্গ দ্বীপ।
বায়জিদ পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের তাফালবাড়ী গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা।
বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পায়রা-বিষখালী-বলেশ্বর এ তিন নদ-নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত হরিণঘাটা বন। এই বনাঞ্চলের আয়তন প্রায় ১০ হাজার একর। এই বন থেকে মূল্যবান কেওড়া, সুন্দরী, বাইনসহ নানা প্রজাতির গাছ কেটে পাচার করছে চোর চক্ররা।
এছাড়া প্রতি বছর কেওড়া সিজন অনুযায়ী কেওড়ার ফল পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
বনের মধ্যে প্রবেশ করে নানা কৌশলে টাকা পয়সার প্রলোভন দেখিয়ে বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তারা নিয়ে যাচ্ছে কেওড়া সহ কেওড়ার গাছ। জানা গেছে এই সব কেওড়া সাতক্ষীরা সহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
নাম না প্রকাশের শর্তে এলাকার অনেকেই বলে অসাধু যুবলীগের ওই নেতা ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসার মামলায় সদ্য জেল থেকে জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত যুবলীগের কর্মী বাইজিদসহ কয়েকজন মিলে এই পাচারের সাথে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। পাথরঘাটা প্রতিনিধি নাম প্রকাশ করতে চাইলে এলাকার অনেকেই বলেন তারা খুব ভয়ানক সাগরে ডাকাতের সাথে এদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে আমরা এই সকল বিষয় নিয়া কথা বলতে গেলে অথবা নাম প্রকাশ করে সাক্ষ্য দিলে তারা যে কোন সময় খারাপ কোন দূর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে যুবলীগ নেতা বাইজিদ ইয়াবাসহ নানান ধরনের মাদক ব্যাবসার সাথে জড়িত ছিল। এমন কি মায়ানমার থেকে পাথরঘাটা মঠবাড়িয়া অঞ্চলে ইয়াবা সাপ্লাইয়ার এর সাথে তার সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক মাস আগে মাদক সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় জেল হাজতে পাঠানো হয় তাকে।
এলাকা বাসীর অভিযোগ মাদক ব্যাবসায় নাম ছড়িয়ে পড়ায় এইবার গাছ পাচারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বাইজিদ। এই সব কাজে হরিণঘাটা বনের সাথে থাকা বাড়ির কিছু কাঠ ব্যবসায়ী এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানান অন্য স্থানীয়রা।
এক বিশ্বস্ততার সূত্রে জানা গেছে প্রতিদিন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেই মুন্সীর হাট আলমগীর মেম্বারের ইট, বালু, সিমেন্টর দোকানের পিছন থেকে ট্রাকে এই সকল পাচারের মালামাল লোড করা হয় খাল থেকে।
তবে বন কৃতপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে কতিপয় লোক বনের মধ্যে থাকে, মাছ ধরে আবার বনের গাছ কেটে আশপাশে বিক্রি করে বলে জানান বন বিভাগের এ কর্মকর্তা। বনের পাহারায় লোকবল সংকটের কারণে এমন ঘটনা ঘটছে বলেও জানান তিনি।
অধিকহারে গাছ কাটার ফলে উজাড় হচ্ছে বনের পশু পাখি। ঘুর্ণিঝড় সহ নানা প্রলয়ংকরী প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। তাই গাছ নিধনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে হরিণঘাটা বনকে বাঁচানোর দাবি স্থানীয়দের।
পাথরঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মনির জানান, আমাদের এই এলাকায় সুন্দরী গাছ নেই তাই তারা হয়তো কেওড়া গাছ চুরি করে কাটতে পারে এবং কেওড়া ফল দেয়ার মত ক্ষমতাও আমাদের নেই। এগুলো হয়তো সে চুরি করে। এরকম কোন অভিযোগ আমার কাছে এখন পর্যন্ত আসে নাই।