আমতলীতে রাস্তার কাজে অনিয়ম ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
আমতলী প্রতিনিধি:
বরগুনা আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দর বাজারে জায়গা থেকে মসজিদ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার একটি দ্বি-স্তর বিশিষ্ট ইটের সলিং বসাতে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট ও মাটিযুক্ত বালু ব্যবহারের রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে গভীর রাত পর্যন্ত তড়িঘড়ি কাজ করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তা তৈরি করায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
স্থানীয়রা জানান, আমতলী উপজেলার আঠারো গাছিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের খেয়া ঘাট থেকে মূল রাস্তা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব পান মাহি এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এরপর নিম্নমানের ইট ও পরিমাণমতো বালু না দিয়ে রাস্তা নির্মাণ শুরু করেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের ইটের কারণে রাস্তা কতদিন টিকবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণের শুরু থেকেই রাস্তায় নিম্নমানের ইট ব্যবহারের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে বাধা দেয়। ওই সময় নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা নিম্নমানের ইট ব্যবহার না করার প্রতিশ্রতি দিলে রাস্তার কাজ শুরু হয়। কিন্তু শুরুর কয়েক দিন পর আবারও নিম্নমানের ইট আনতে দেখে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং রাস্তা নির্মাণে বাধা দিলেও স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে কাজ চালিয়ে নেয়া হয়। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়।
মোটরসাইকেল সভাপতি দুলাল মিস্ত্রী বলেন, দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে অভিযোগ সবার। খুবই নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। তা কোনো নাম্বারের মধ্যেই পড়ে না। রাস্তার নিচে ভাঙা ইট ব্যবহার করছে তারা। বালু দেয়া হচ্ছে কম। ইটের মান এতই নিম্নমানের যে এক-দুই হাত উঁচু থেকে ফেললেই ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে যায়।
চৌরাস্তা দোকানদার ইউছুপ জানান, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নিম্নমানের ইট ও পরিমাণমতো বালু না দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে।ইটের বুনন ফাঁকা ফাঁকা। রাস্তায় এক নাম্বার ইট বসানোর কথা থাকলেও, দেওয়া হচ্ছে নাম্বারবিহীন ইট। পিওর বালির পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে মাটি যুক্ত বালি। যে পরিমাণ বালি দেওয়ার কথা, তার থেকে অনেক কম দেওয়া হচ্ছে। এভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হলে, তা বেশি দিন টিকবে না।
এ বিষয় জানতে মাহি এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদার শহীদ মৃধা বললে তিনি জানান রাস্তা নির্মাণে কোনো রকম অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবি করে মাহি এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এ সময় আঠারো গাছিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ সাহেবের নাম কে ব্যঙ্গ করে কথা বলেন। একাধিকবার তার নাম সম্পর্কেে জানতে চাইলে তিনি ব্যঙ্গ করেই বলেন। এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে মালিক শহীদ মৃধা তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আনেন। তার কাজে তিনি বাধা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন। সাংবাদিকদের ছবি তুলেও তিনি বিভিন্ন হুমকি দেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শহীদ মৃধা।
বর্তমান চেয়ারম্যান কে ব্যঙ্গ করে কথা বলার সময় উপস্থিত ছিলেন বাজারের ব্যবসায়ী কাউছার হাওলাদার ও বর্তমান কাজী ইসমাইল হোসেন এর কার্যালয় বসে চেয়ারম্যান কে ব্যঙ্গ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
প্রকৌশলীর জনাব নজরুল ইসলাম জানায়, সরোজমিনে গিয়ে দেখেছি এবং অভিযোগ সত্যতা প্রমাণ হয়েছে বলে আমি কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তবে ব্যবহার অযোগ্য ইট অপসরাণ করতে ইতোমধ্যে তাকে চিঠি হবে বলে জানান।