আজ পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান
আজ পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর ও মার্চে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। সূর্য এক গোলার্ধ থেকে অন্য গোলার্ধের দিকে যায়। সেপ্টেম্বর ইকুইনক্সকে সাউথওয়ার্ড ইকুইনক্স বলে। এটাকে সূর্যের বিষূব রেখা (পৃথিবীর দুই মেরুর ঠিক মাঝ বরাবর পূর্ব-পশ্চিমে কল্পিত রেখার নাম। এটাকে নিরক্ষ রেখাও বলে) অতিক্রমের সময়কালও বলা হয়।
ইকুইনক্স অর্থ সমান রাত। এটা ল্যাটিন ভাষার শব্দ। কিন্তু বাস্তবে সূর্যের কৌণিক আকার ও বায়ুমণ্ডলে আলোর প্রতিসরণের কারণে দিন ও রাত একেবারে সমান হয় না। তবে দিন-রাত ১২ ঘণ্টার খুব কাছাকাছি থাকে। এ সময়ের পর থেকে উত্তর গোলার্ধে সূর্য ক্রমে দক্ষিণ থেকে উঠে এবং দক্ষিণে হেলে অস্ত যায়।
এ সময় থেকে গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে এবং উত্তর গোলার্ধের দেশগুলো ক্রমে শীতকালীন আবহাওয়ার দিকে যেতে থাকে। এ সময় কোথাও শরৎকাল আবার কোথাও হেমন্তকাল। অপর দিকে এ সময় দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকালীন আবহাওয়া থেকে বসন্তকালীন আবহাওয়ার দিকে যেতে থাকে।
সেপ্টেম্বর ইকুইনক্সকে বছরের দ্বিতীয় ইকুইনক্স বলে। প্রথম ইকুইনক্স ঘটে থাকে ২১ মার্চ। এটা গ্রীষ্ম বিদায়ের ইকুইনক্সও বলা হয়।
কেন এমন ঘটে :
সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর মেরু রেখা ধ্রুবতারামুখী হয়ে কক্ষপথের সাথে সব সময় ৬৬.৫ ডিগ্রি কোণ করে হেলে থাকে। আবার নিরক্ষ রেখা বা বিষূব রেখার সমতল কক্ষপথের সাথে ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে। এ কারণে প্রতি বছর ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান হয়ে থাকে। এই সময় পৃথিবীর দুই গোলার্ধেই দিনের বেলা ১২ ঘণ্টা করে আলো পায় এবং রাতের বেলা ১২ ঘণ্টা করে অন্ধকারে থাকে।
২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর নিরক্ষ রেখায় সূর্যের আলো ৯০ ডিগ্রি কোণে এবং সুমেরু ও কুমেরু বৃত্তে ৬৬.৫ ডিগ্রি কোণে আপতিত হয়। ২১ মার্চের পর ২১ জুন পৃথিবীর উত্তর মেরু সবচেয়ে বেশি সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে। তখন উত্তর মেরুতে ২১ জুন দিন সবচেয়ে বড় হয়ে থাকে। একই সময়ে দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে সব চেয়ে দূরে সরে যায়। ফলে এ দিন দক্ষিণ মেরুতে সবচেয়ে ছোট দিন। আবার ২১ ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে ছোট হয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধে রাত সবচেয়ে বড় থাকে।
সেপ্টেম্বর ইকুইনক্সের সময় দুই মেরুতেই রাতের বেলা নানা রঙের আলোর ঝলকানি দেখা যায়।