রিফাত হত্যার সিসিটিভি ফুটেজ ও চার্জশিটের গড়মিল
বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় পুলিশের চার্জশিটে নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্যে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। চার্জশিটে পুলিশ বলছে,‘রিফাত শরীফ রক্তাক্ত অবস্থায় একাকী রিকশাযোগে হাসপাতালে গেলেও মিন্নি তখন রাস্তার ওপর পড়ে থাকা তার ভ্যানিটি ব্যাগ ও জুতা তুলতে ব্যস্ত ছিলেন।’
অন্যদিকে বরগুনা সদর জেনারেল হাসপাতালের সম্মুখভাগে স্থাপিত সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, ‘মিন্নিই তার স্বামী রিফাত শরীফকে রিকশাযোগে জখম অবস্থায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।’
চার্জশিটে মিন্নিকে তার স্বামীর হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত বলে দেখানো হয়েছে। এতে আরো দাবি করা হয়েছে, মিন্নির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকা অবস্থাতেই রিফাত অন্য মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। আরো দাবি করা হয়েছে, নিহত নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। পুলিশ এক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিকে উপস্থাপন করেছে।
বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে গত ২৬ জুন রিফাত শরীফকে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করে। সম্প্রতি প্রকাশিত হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এরপর মিন্নি একাই রিফাতকে রিকশাযোগে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। আদালতেও মিন্নি একই কথাই জানিয়েছেন।
আদালতে দাখিলের ১৮ দিন পর বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা ৬১৪ পৃষ্ঠার চার্জশিটের ৬৪ পৃষ্ঠার সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে : বরগুনা হাসপাতাল থেকে রিফাতকে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হলে মিন্নি তার জামা-কাপড় রক্তে ভেজা থাকার খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বরিশাল না গিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায়।
রিফাত হত্যাকাণ্ডের ৬৬ দিন পর ১ সেপ্টেম্বর আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. হুমায়ূন কবির। গত ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয় হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে। মিন্নি বর্তমানে উচ্চআদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ছয় কিশোর অপরাধী শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছে। আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ চার্জশিটভুক্ত আরেক কিশোর অপরাধী আরিয়ান হোসেন শ্রাবন জামিনে রয়েছেন। (সূত্রঃ আমাদের সময়.কম)