গ্লোবাল ক্লাইমেট অ্যাকশন উইক জরুরী অবস্থা ঘোষণার দাবিতে বরিশালে তরুণদের জলবায়ু ধর্মঘট
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গ্লোবাল ক্লাইমেট অ্যাকশন উইক উপলক্ষ্যে বরিশালে ক্লাইমেট স্ট্রাইক করেছে তরুণ ও স্কুল শিক্ষার্থীরা।
জলবায়ু সংকট থেকে উত্তরণে এবং তরুণ প্রজন্মের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে বিশ্বনেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সরকারের প্রতি জলবায়ু জরুরী অবস্থা ঘোষণা করতে আহ্বান জানান ফ্রাইডে’স ফর ফিউচার আন্দোলনের খুদে জলবায়ু কর্মীরা। বরিশালসহ এবার পৃথিবীর ৪০০ শহরে পালিত হবে ‘জলবায়ু ধর্মঘট’ বা ‘ক্লাইমেট স্ট্রাইক এবং আন্দোলনকারীর সংখ্যাটা কোটি ছাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে তরুণ শিক্ষার্থীরা জলবায়ু ধর্মঘট শুরু করলে কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে এ সময় বক্তব্য দেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের নির্মম শিকার। কিন্তু এর জন্য বাংলাদেশের দায় নেই। সরকার বদ্বীপ পরিকল্পনার পাশাপাশি ২৫টি মন্ত্রণালয়-বিভাগ চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জন্য জলবায়ু বাজেট প্রণয়ন করেছে। যা জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাত মোকাবিলায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। গ্লোবাল ক্লাইমেট স্টাইক বিশ্বব্যাপি শিশু ও তরুণদের একটি আন্দোলন। যার প্রতি শুরু থেকে তিনি সমর্থন দিয়ে আসছেন। শিশুদের ভবিষ্যতের সুরক্ষায় তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে এবং জলবায়ু অর্থায়ণ বাড়াতে তিনি আহ্বান জানান।
এছাড়া জলবায়ুকে ক্ষতি করে এমন জীবনযাপন থেকে নাগরিকদের বিরত থাকার পাশাপাশি বেশি করে গাছ লাগানোর প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করেন। একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই কর্মসূচি আয়োজন করে যুব সংগঠন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সমন্বয়কারী সোহানুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন তোফাজ্জেল হোসেন মানিক মিয়া মহিলা কলেজের অধ্যাপক শিবানী চৌধুরী ও বরিশাল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি আ: হাই সিকদার।
এসময় বক্তারা বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবেলায় শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ এবং প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানান। বাংলাদেশে ‘জলবায়ু জরুরী অবস্থা’ ঘোষণার দাবিতে ফ্রাইডেস ফর ফিউচার আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ও আয়োজক সংস্থা ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়।
এতে বলা হয়, বিশ্ববাসীর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে বাংলাদেশে “জলবায়ু জরুরী অবস্থা ঘোষণা” করলে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের জন্য বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা এবং সাধারণ জণগণের দুর্ভোগ অনুধাবনে সহায়ক হবে। পাশাপাশি এই সংকটে হতে উত্তরণে বৈশ্বিক বিভিন্ন আয়োজন থেকে বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য হিস্যা পাওয়া সহজ হবে। পরে তরুণদের দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য জলবায়ু পদযাতা বের হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ হয়। দুপুর সাড়ে ১১টায় বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করে শিশুরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে বরিশালের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও যুব সংগঠনের কয়েকশ’ শিশু ও তরুণ।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান জানান, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বৃহদাংশই তরুণ। জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকি সমূহ আমরা মোকাবেলা করছি, সে বিষয়ে আমাদের কথা নীতিনির্ধারকদের শুনতে হবে এবং তা বিবেচনা করে জরুরী ভিত্তিতে কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে। জলবায়ু সংকট উত্তরণে প্রয়োজন হবে অনেক বন্ধু এবং দূষণকারী দেশগুলো থেকে প্রাপ্য ন্যায্য হিস্যা। ফ্রাইডেস ফর ফিউচারের ডাক, রাস্তায় নামুক সকলে। দাবি তুলুক, পৃথিবীকে তিলেতিলে মারা বন্ধ করুন। পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচতে দিন। পৃথিবীকে খুন করার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন।