রিফাত শরীফ হত্যা বরগুনায় মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। রোববার বিকেলে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।
বরগুনা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রিফাত শরীফ হত্যকান্ডের পর পুলিশ নিরবচ্ছিন্নভাবে গভীর তদন্ত শেষে ২৪ জনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪/২১২/১০৯/১১৪/১২০-বি(১) ধারায় বরগুনা সদর থানার অভিযোগপত্র ২৮০(১) আদালতে দাখিল করা হয়েছে। মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তবে চার্জশিট ও আসামিদের বিষয়ে আর কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চার্জশিটের ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকা-ের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় ২৭ জুন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে। কিন্তু মিন্নির শ্বশুর মামলার ১৮ দিন পর গত ১৩ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত। এর পর মামলাটির তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়। পরে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় মিন্নিকে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ২ জুলাই এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
উল্লেখ্য, ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। তারা চেহারা লুকানোরও কোনও চেষ্টা করেনি। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।