মঠবাড়িয়ায় বিধবা বৌদিকে ধর্ষণের দায়ে দেবরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আপন বিধবা ভাবিকে (বৌদি) ধর্ষণের দায়ে দেবরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একই সাথে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
মঙ্গরবার দুপুরে পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ মিজানুর রহমান এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম বাবুল হালদার ওরফে কালা মঠবাড়িয়া উপজেলার কবুতরখালী গ্রামের মৃত প্রমাংশু হালদারের পুত্র।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার কবুতরখালী গ্রামের মৃত প্রমাংশু হালদারের পুত্র লক্ষণ হালদার বেশ কয়েক বছর আগে মারা যায়। স্বামী লক্ষণ হালদারের মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী ৬ বছরের শিশু সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই নিহত লক্ষণ হালদারের আপন ছোট ভাই ও গৃহবধূর দেবর বাবুল হালদার প্রায়ই ওই বিধবা গৃহবধূকে কু-প্রস্তাব দিতো।
কিন্তু এতে ওই গৃহবধূ রাজী না হওয়ায় ঘটনার দিন ২০১০ সালের ১৭ আগষ্ট মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বৌদির ঘরে ঢুকে মুখে গামছা ঢুকিয়ে দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় দেবর বাবুল হালদার। বিষয়টি ওই গৃহবধূ এ মামলার ২নং আসামি মেজ দেবর রামচন্দ্র ও শাশুড়িকে জানালে তারা ধর্ষক বাবুল হালদারকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং ঘটনার সত্যতা পেয়ে ধর্ষক বাবুল হালদারের সাথে বিধবা পুত্রবধূকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন।
বিয়েতে রাজী হওয়ার কথা বলে কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নেয় ধর্ষক বাবুল। বিয়ের নাম করে বিধবা বৌদিকে কালী মন্দিরে নিয়ে মালা বদল করে সে। এরপর থেকে ২০১১ সালের ৮ মার্চ পর্যন্ত একত্রে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বাড়িতে বসবাস করে সে। এই সময়ের মধ্যে বিধবা বৌদি গর্ভবতী হয়ে পড়ে।
পরে ধর্ষক প্রতারক বাবুল অন্যত্র বিয়ে করে বিধবা বৌদিকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করলে নির্যাতিতা এ নিয়ে মিমাংসা করতে ব্যর্থ হয়ে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ মঠবাড়িয়া থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে ধর্ষক বাবুলের নামে চার্জশিট জমা দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আঃ রাজ্জাক খান বাদশা।