সাইকেলের চাবি ও জামা দেখে ছেলের লাশ সনাক্ত করলেন মা
বরগুনার পাথরঘাটা সংলগ্ন বিষখালী নদী থেকে শনিবার (১০ আগস্ট) দুুপুরে উদ্ধারকৃত মাথাবাহিন লাশের পরিচয় সনাক্ত করেছেন মা লাইলী বেগম। রোববার দুপুরে পাথরঘাটা থানা পুলিশের কাছে লাশের সাথে আলামত দেখে সনাক্ত করেন।
মরদেহটি বরগুনার সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের আ. রহিম খানের ছেলে মো. সোহেল খান। সোহেল বরগুনার গৌরিচন্না টেকনিক্যাল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। পাথরঘাটা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মা লাইলী বেগম বলেন, সোহেল ৩১ জুলাই কলেজ থেকে বাড়িতে এসে দুপুরের ভাত খেয়ে পার্শবর্তী ফুলঝুড়ি মাঠে ফুটবল খেলা দেখতে যায়। পরে আর বাড়িতে না আসায় ১ আগস্ট বরগুনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়, যার ন¤¦র-৪১। পাথরঘাটা থানায় এসে লাশের সালে আলামত দেখে নিখোজের দিন যে রঙের শার্ট ও প্যান্ট পড়নে ছিল তা দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি সোহেল। তাছাড়া লাশের সাথে থাকা বাইসাইকেলের একটি চাবির সাথে তাদের বাড়িতে রাখা চাবির ন¤¦রের সাথে মিল রয়েছে।
লাইলী বেগম আরও বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে আমার সামনে বসে সোহেলের ফোনে অনেকবার ফোন আসে। এ সময় আমার কাছ থেকে ঘরের পিছনে গিয়ে কথা বলে। কিন্তু কার সাথে কথা বলেছে আমি জানিনা। এরপর খেলা দেখতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। সোহেলের ভগ্নিপতি শাহিন, চাচাতো ভাই রেজাউল কবির অভিযোগ করেন, লাশ পাওয়ার দিন পাথরঘাটা থানা থেকে সদর থানায় অবহিত করলেও বরগুনা সদর থানায় জিডি থাকা স¦ত্বেও সদর থানার ওসি বিষয়টি আমলে নেয়নি। এ বিষয় বরগুনার সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন অভিযোগ অস¦ীকার করে বলেন, আমরা যথাযথভাবেই এগুচ্ছি। কাজে কোন গাফেলতি করিনি। কিন্তু ভিকটিমকে দুটি পরিবার দাবি করছেন। বিষয়টি আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেই কাজ করছি।
এর আগে শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বিষখালী নদীর বরগুনা সদর থানার সীমানায় জেলেদের জালে লাশ জড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক পাথরঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে বরগুনা সদর থানাকে অবহিত করেন। বরগুনা সদর থানার ওসি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ায় পাথরঘাটা থানায় ওসির অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তদন্ত ওসি সাইদুল ইসলাম বিষয়টি আমলে নিয়ে লাশ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানায় জিডি মুলে লাশ ময়না তদন্তের বরগুনা মর্গে ওইদিনই মাথাবিহিন ওই লাশের কাপড় চোপড় দেখে পাথরঘাটা উপজেলার রুপধন এলাকার মৃত হাতেম আলী আকনের ছেলে ফারুক আকনের (২৪) লাশ বলে দাবি করেন ভাবি রেহানা বেগম ও তার তিন বোন। তবে ওই লাশের সাথে থাকা কোন আলামতের প্রমান দেখাতে পারেনি তারা। ঘটনার পরদিন ময়না তদন্ত শেষে পাথরঘাটা উপজেলার কুপদোন গ্রামে দাফন করেছে দাবিকৃত স¦জনরা।
পাথরঘাটা থানা তদন্ত ওসি মো.সাইদুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধারের দিন যারা সনাক্ত করেছেন লাশের সাথে পাওয়া আলামতের সাথে তারা কোন প্রমানাদি দেখাতে পারেনি। তবে দেড়িতে হলেও সোহেলের লাশ বলে সনাক্ত করেছেন তার অনেকগুলো প্রমান দেখাত পেরেছেন মা লাইলী বেগম।
পাথরঘাটা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, মা লাইলী বেগম ও নিকটতম আত্মীয়স¦জন চাবি, প্যান্ট ও জামা দেখে সনাক্ত করেন। যেহেতু নিখোঁজের পর বরগুনা সদর থানায় জিডি করা হয়েছে এ কারণে সদর থানায় যাওয়ার জন্য তাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় সর্বাত্বক আইনী সহযোগিতা দিতে প্রস্তত।