নায়করাজ রাজ্জাকের ২য় মৃত্যুবাষিকী আজ
২০১৭ সালের ২১ আগষ্ট সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান তিনি। তখন তার বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর।
১৯৬৬ সালে ‘বেহুলা’ ছবিতে লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার পর রাজ্জাকের নাম সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। নায়ক হিসেবে এ ছবিতে অভিনয় করলেও এর আগে তিনি অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছিলেন। ১৯৬৬ থেকে এ পর্যন্ত রাজ্জাক ৩০০ ছবিতে অভিনয় করেছেন। পৃথিবীর চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একজন তারকার পক্ষে এতগুলো ছবিতে অভিনয় করা উল্লেখ করার মতো ঘটনা।
ঢাকার ছবিতে রাজ্জাকই প্রথম তারকা প্রথা চালু করেছিলেন। তিনি যখন ছবিতে নায়ক ছিলেন তখন সর্বশ্রেণীর মানুষ ছবি দেখত। তার অভিনীত ‘ময়নামতি’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘অবুঝ মন’, ‘প্রতিনিধি’— দর্শকরা বার বার দেখেছেন। পুরনোরা নয়, এ প্রজন্মের দর্শকরাও রাজ্জাককে বলেন ‘নায়করাজ’। তাই তো তিনি জীবদ্দশায় কিংবদন্তির তারকা হয়ে জ্বলজ্বল করছেন। রাজ্জাক একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক।
নায়ক রাজ রাজ্জাক ১৯৪০ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার নাগতলায় জন্মগ্রহণ করেন।
কিশোর বয়স থেকে কলকাতার বিভিন্ন মঞ্চনাটকে জড়িয়ে পড়েন রাজ্জাক। কলেজে পড়ার সময় ‘রতন লাল বাঙালী’ নামে একটি ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৬৩-৬৪ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগার কারণে স্ত্রীকে নিয়ে চলে এলেন ঢাকায়। ঢাকায় এসে যোগ দেন ইকবাল ফিল্মস লিমিটেডে। এখানে মাসে সামান্য বেতন পেতেন। পাশাপাশি মঞ্চ ও টেলিভিশনে নাটক করে যা পেতেন তা দিয়ে কোনভাবে সংসার চালাতেন। ১৯৬৫ সালে ইকবাল ফিল্মসের চাকরি ছেড়ে দিয়ে পরিচালক কামাল আহমদের সহকারী হন।
‘বেহুলা’ মুক্তির পর চলচ্চিত্র প্রযোজকরা দীর্ঘদিন পর একজন সুদর্শন নায়কের দেখা পেলেন। যে জন্য ছবি নির্মাতারা ছবি নির্মাণের জন্য তখন থেকেই রাজ্জাকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠল।
১৯৬৬ থেকে ’৭০ সাল পর্যন্ত সুজাতা, সুচন্দা,কবরী ও ববিতার বিপরীতে তিনিই বেশি অভিনয় করেছেন। তবে রাজ্জাকের সাথে কবরীর জুটিটি ছিলো বেশী জনপ্রিয়। রংবাজ ছবিতে অভিনয় করে এই জুঠি অধিক জনপ্রিয়তা পায়। তবে ববিতার সাথে তার জুটিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । তার নিজের প্রযোজনায় নির্মিত “অনন্ত প্রেম” ছবিটি ছিলো এই জুটির সেরা ছবি গুলির মধ্যে একটি । এই ছবির গান গুলি সেসময় মানুষের মুখে মুখে শোনা যেতো। এই ছবির চুম্বনের দৃশ্যটি ছিলো বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সাহসী দৃশ্য।