সহকারী শিক্ষকের মিথ্যা অপবাদ ও হয়রানি, প্রধান শিক্ষকের আত্মহত্যা হুমকি
বরগুনার পাথরঘাটায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের মিথ্যা অপবাদ ও হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক নেছার উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এনিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম।
পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন আমি চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারী পাথরঘাটা উপজেলার পুর্ব ঘুটাবাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পাঠদান দিতে আমার সহকর্মী শিক্ষকদের অনুরোধ করি। এবং সে অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু এ স্কুলের সহকারী শিক্ষক নেছার উদ্দিনের শিক্ষকতার পাশাপাশি দোকানদারী, ট্রলার ও মাছের ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় সঠিক সময়ে স্কুলে উপস্থিত না হয়ে প্রতিদিন বিলম্ব করে আসে। বিলম্ব হওয়ায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে সে এলাকার ছেলে হিসেবে এবং ম্যানেজিং কমিটির উপর প্রভাব খাটিয়ে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আরো বলেন, আমাকে শিক্ষক নেছার মানসিক ও সামাজিক ভাবে যে হেয় প্রতিপন্ন করেছে এতে আমার আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নেছার উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন একই স্কুলের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষক নানা ভাবে যৌন হয়রানি করছে এবং তার স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে শিক্ষার্থী বিষয়টি অস্বীকার করেছে। শিক্ষার্থীবাবা জানান ঐ শিক্ষক নেছার উদ্দিন আমার মেয়েকে শিখিয়ে দিয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
স্থানীয়দের থেকে খোঁজ নিয়ে শিক্ষক নেছারে বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুলের দাতা সদস্য আব্দুল খালেক আকন জানান, শিক্ষক নেছার স্থানীয় হওয়ার কারণে বিদ্যালয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তার কারনে কোনো শিক্ষক এখানে স্থায়ী হতে পারে না।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মৃর্ধা বলেন শুনেছি স্কুলের ছাত্রীদের ও অভিভাবকদের চাপ দিয়ে একটি অপবাদ ছড়াচ্ছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ইতিপূর্বে শিক্ষক নেছার অন্যান্য শিক্ষকদেরকে ও একই ভাবে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে।
ঐ প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান শিক্ষক, হেমায়েত উদ্দিন মাষ্টার বলেন তিনি সহ আরো ৪/৫ জন প্রধান শিক্ষক নেছারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে শারীরিক ভাবেও লাঞ্ছিত হয়ে অন্যত্র বদলি হয়ে চলে গেছেন।
স্কুল কমিটির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন বলেন, গত দু বছর এ স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য ছিলো। কেউ এ স্কুলে আসতে চায় না। গত ফেব্রুয়ারিতে আব্দুল হালিম প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এখন তার বিরুদ্ধে ও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছগির হোসেন বলেন বিষয়টি আমি শুনেছি। এই ব্যাপারে স্থানীয় ভাবে বৈঠকও হয়েছে। এতে নেছার উদ্দিনের অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একজন ভালো ও অভিজ্ঞ শিক্ষক।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নগেন্দ্র নাথ সরকার বলেন এ বিষয়ে একটি দরখাস্ত পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে