পাথরঘাটার জেলের জালে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ
দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধে শেষে রুপালি ইলিশে বৃহত্তম মৎস্য অবতরন কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটায় এখন প্রান চাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে। দক্ষিন উপকুলের বরগুনার পাথরঘাটার জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালী ইলিশ ধরা পড়ায় পাথরঘাটাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় কয়েক লাখ জেলে পরিবারের মাঝে ইলিশের হাসি ফুটে উঠেছে। ৬৫ দিনের দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর কাঙ্খিত রুপালী ইলিশ ধরা পড়ায় এ হাসি ট্রলার মালিক ও আড়ৎদারদের মুখেও। কর্মচাঞ্চল্যে প্রাণ ফিরে পেয়েছে দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরন কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটার বিএফডিসি মৎস্য ঘাটে।
সরেজমিনে বিএফডিসি ঘাটে গিয়ে জানা গেছে, ইলিশ মৌসুমে দীর্ঘ অপেক্ষার পর গভীর বঙ্গোপসাগরে গত কয়েকদিন থেকে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালী ইলিশ ধরা পরছে। তবে পাশ্ববর্তী নদীতে ইলিশ কম পাওয়া গেলেও শুস্বাদু হওয়ায় এ মাছগুলোর দাম অনেক বেশী। এ নদীর মাছের প্রতি মন বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা দরে এবং গভীর সমুদ্র থেকে যে ট্রলার গুলো আড়ৎ ফিরে আসে তারা ৭ থেকে ৮শ গ্রামের ইলিশের প্রতিমন বিক্রি হয় ১৮ হাজার টাকা করে। আবার ৪ থেকে ৫শ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয় ১২ হাজার টাকা দরে। প্রায় ট্রলারেই প্রতি ট্রিপে ৪ থেকে ৮লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি করছে। এ ইলিশ গুলো পাথরঘাটার মৎস্য আড়ৎ থেকে রপ্তানী কারকরা ট্রাকে করে দেশের বিভিন্নস্থানে বাজারজাত করছেন।
পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১শ ৭০টন মাছ বিকিকিনি হয়েছে যা থেকে এ পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৭লাখ ৩৭ হাজার ৩৩০ টাকা।
আল্লার দান মৎস্য আড়তের মালিক যুগল কর্মকার জানান, ৬৫ দিন অবরোধ থাকায় এ মৌসুমে অনেক টাকার লোকসান দিয়েছি। গত ৩ থেকে ৪ দিনে মৎস্য আড়ৎগুলোতের এখন প্রচুর পরিমান ইলিশ বেচা-কেনা হয়েছে। এখন যে রকম মাছ জেলেদের জালে ধরা পরতে শুরু করেছে তাতে মনে হয় পিছনের ধার দেনা শোধ করে উঠতে পারবে বলেও জানান তারা।
গভীর সমুদ্র থেকে ফিরে আসা এফবি গোলাপফুল ট্রলারের মাঝি হাফিজুল ইসলাম ও এফবি আলম-২ ট্রলারের মাঝি আব্দুর রহিম জানান, সাগরে এখন প্রচুর পরিমান ইলিশ মাছ আছে। আমরা প্রত্যেকটা ট্রলারে অল্প করে জাল ফেলতে পরেছি তাতেই ৪হাজার মাছে পেয়েছি। যা ৫ থেকে ৬লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব। অবহাওয়া খারাপ থাকার কারনে বেশী সময় থাকতে পারিনি ঘাটে চলে আসতে হয়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে আমাদের ট্রলারে ১০ থেকে ১২ হাজার মাছ জালে ধরা পরত যার দাম ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারতাম। তারা আরো জানান, আমাদের দেশে ৬৫ দিন অবরোধ দেয়ার কারনে ভারতীয় ট্রলার গুলো বাংলাদেশী সীমানায় এসে মাছ ধরেছে। এই অবরোধ যদি ভারতে সাথে একত্রে দেয়া হত তবে আমরা আরো বেশী মাছ ধরতে পারতাম।
মৎস্য অবতরন কেন্দ্র বিএফডিসির শ্রমিক সিদ্দিক, জুয়েল, রিপন জানান, এক সপ্তাহ আগেও এই মাছের অর্ধেক পরিমানও উঠেনাই। অবরোধ থাকায় আমরা প্রায় পুরো ইলিশ মৌসুমেই অলস সময় কাটাতে হয়েছে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের মার্কেটিং অফিসার মো. আহম্মেদ উল্যাহ জানান, গত ৪দিনে গড়ে প্রতি দিন ৪০ থেকে ৪২ টন ইলিশ মাছ বিকিনিকি হয়েছে যা থেকে সরকারী রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭লাখ ৩৭ হাজার ৩৩০ টাকা। এভাবে ইলিশসহ অনান্য মাছ উঠলে জেলেদের মুখে যেমন হাসি ফুটবে তেমনি সরকারী কোষাগারেও প্রচুর পরিমান রাজস্ব জমা হবে।