বামনায় মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে বাবার সংবাদ সম্মেলন
আমার মেয়েকে আর কোন দিন ফিরে পাবোনা এটাকেই বাস্তবতা হিসাবে মেনে চলি। তবুও যতদিন বেচে থাকবো এর মধ্যে আমার একমাত্র মেয়েকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তাদের বিচার নিচের চোখে দেখে যেতে চাই। নতুবা পরপারে গিয়ে মেয়ের কাছে কি জবাব দিবো? আমার মেয়ের হত্যাকারিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবী জানাই।
শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুর একটায় বরগুনার বামনা প্রেসক্লাবে মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত সানজিদার আক্তরের বাবা প্রাক্তন ব্যাংক কর্মকর্তা মো.সোহরাব হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিতবক্তব্যে তিনি জানান, তার মেয়ে সানজিদার আক্তারের সাথে ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা গ্রামের স্কুল শিক্ষক আজিজ ফরাজীর বড় ছেলে মো. খায়রুল আলম জসীম এর বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে তারা বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য তার মেয়েকে নির্যাতন করতো। মেয়েটি ছোটবেলা থেকেই দয়ালু প্রকৃতির। যার কারণে গত ৫ মে তার মেয়ে টিউবওয়ালে মাছ ধৌত করতে গেলে একই বাড়ীর এক অসহায় স্বজনকে সেই মাছ থেকে দু টুকরো মাছ তাকে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার শ্বাশুরী মোসা. খাইরুন্নেসা টুনী ক্ষিপ্ত হয়। এ নিয়ে মেয়ের বাড়ীতে স্বামীসহ অন্য সদস্যদের সাথে পারিবারি ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এই ঝামেলা হাতাহাতিতে রুপ নেয়। জামাই খায়রুল আলম জসিম ও ছোট ভাই ওয়াসীম সানজিদাকে মারধর করে। ওই মারধরে সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারাযায়। বিষয়টি তাৎক্ষনিক ধামাচাপা দিতে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার চালায়। মেয়ে মারাগেছে ওই খবরটি পর্যন্ত তারা তাকে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন সানজিদার বাবা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, তার জামাই এলাকার প্রভাবশালী মহলের সহয়তায় এই পরিকল্পিত হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়। পুলিশসহ সকলকে ম্যানেজ করে তারা লাশ ময়না তদন্তে বরগুনায় পাঠায়। তারা বারবার পুলিশকে বোঝানোার চেষ্টা করে এটা পরিকল্পিত হত্যা তবুও পুলিশ তা আমলে নেয়নি। পরে ঘটনার চারদিন পরে বরগুনা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সানজিদার বাবা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামে করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেণ। মামলাটি বামনা থানায় এজারভুক্ত হলেও পুলিশের সহায়তায় আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে তার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচারের দাবী জানান।
এব্যপারে ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, কোর্ট থেকে মামলাটি পাঠানোর পরে বামনা থানায় এজাহারভ’ক্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আসামীদের গ্রেফতার করতে পারছিনা। রিপোর্টটি পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।