৬৫ দিনের নি:শ্বাস পাথরঘাটার জেলেদের সাগরে যাত্রা শুরু

এ এস এম জসিম
এ এস এম জসিম, বার্তা সম্পাদক
প্রকাশিত: ১১:৪৩ এএম, ২৪ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ০৯:০৭ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৯


বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত সকল মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননের জন্য ৬৫ দিনের অবরোধ শেষ হয়েছে আজ বুধবার। এ কারণেই সাগরের মাছসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রাণিজসম্পদ রক্ষার পাশাপাশি ভারা বাড়াতে দীর্ঘসময় মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞারোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দক্ষিনাঞ্চলের জেলেদের কস্ট হলেও সঠিক ভাবে পালন করেছে। বর্তমানে দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরন কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাটসহ অন্যান্য ঘাটে জেলেদের চলছে প্রস্তুতি। দীর্ঘ ৬৫ দিন পরে শুরু হবে মাছ ধরা। আর বঙ্গোপসাগরে মাছধরার সেই চিরায়ত দৃশ্য পাথরঘাটার জেলে পল্লীগুলোতে দেখা যাবে।

পাথরঘাটার বিএফডিসি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ জাল ট্রলারে উঠাচ্ছেন, কেউবা ট্রলারের বাজারের কাজ শেরে ফেলছেন। এসব কাজ শেষে আজ বুধবার থেকে ট্রলার নিয়ে সাগরের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন সকল জেলেরা।
সাগরে যাওয়ার জন্য ঘাটে বাধা ট্রলার।
এক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত গবেষণা মতে, মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননকাল। এ কারণেই সাগরের মাছসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রাণিজসম্পদ রক্ষার পাশাপাশি ভান্ডার বাড়াতে দীর্ঘসময় মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞারোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই পরিপ্রক্ষিতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়।

জলে মনির, কালাম বলেন, সাগরে যাওয়ার জন্য জেলেরা এখন সম্পূর্ন ভাবে প্রস্তুত। জাল, বরফ, জ্বালানি, খাদ্যসামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু নিয়ে জেলেরা প্রস্তুত রয়েছেন এবং আবহাওয়া ভালো থাকলে আমরা ভোর থেকেই সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব। আমরা আসা করছি সাগরে এখন প্রচুর পরিমান মাছ আছে। আমাদের ধারনা যদি সঠিক হয় তবে সাগরে জাল ফেললেই জাঁকে জাঁকে ইলিশ ধরা পরবে এবং পিছনের ধারদেনা কাটিয়ে উঠতে পারব।
জেলেরা জাল বুনছেন।
পাথরঘাটা বিএফডিসির মৎস্য ব্যাবসায়ী মেসার্স পদ্মা ফিস ট্রেডার্সের মালিক সতিন্দ্র নাথ বালাসহ একাধীক ব্যাবসায়ীরা জানান, টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। ফলে জেলার অধিকাংশ ট্রলার বুধবার সাগরে মাছ ধরতে যাবে। যারা প্রস্তুতি শেষ করতে পারবেন নাই, তারা যাবেন আরো দুয়েকদিন পর। এ কারণে এখন শহর ও জেলার অন্যান্য এলাকার ঘাটসমূহে চলছে জেলেদের কর্মব্যস্ত সময়। তারা আরো জানান, প্রতিবছর ট্রলার মালিক এবং শ্রমিকদের লাখ লাখ টাকা দাদন দেই। তারা দাদন নিয়ে সাগরে যেতে না পারায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় আর্থিকভাবে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। পাথরঘাটার সব আড়তদাররা একই ক্ষতির সম্মুখীন।

বাংলাদেশ ফিসিং ট্ররার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। ইলিশ প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছি, কিন্তু ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলতে থাকলে উপকূলের জেলেরা নিঃস্ব হয়ে পড়বে। আর তাই আমরা এ আইনের বিরোধীতা করছি।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)