রিফাত হত্যার পর বরগুনাজুড়ে কড়া নিরাপত্তা, জনমনে স্বস্তি

বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যার পর থেকে ২৪ ঘণ্টা চেকপোস্ট বসিয়ে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে বরগুনা জেলা পুলিশ। এতে বন্ধ হয়েছে মাদক ব্যবসা। সব যানবাহনে চেকিংয়ের ফলে মাদক কারবারিদের আনাগোনা নেই শহরে। এতে স্বস্তিতে রয়েছে জনগণ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বরগুনা টাউনহল জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে বাসস্ট্যান্ড-পুরাকাটা, বরগুনা-বেতাগী-আমতলীর চৌরাস্তা, বরগুনা-বরিশাল-নিশানবাড়ীয়া-বড়ইতলা-পরীরখাল-কালীবাড়ি-স্টেডিয়াম রুটে চেকপোস্ট বসিয়ে সব ধরনের যানবাহন ও যাত্রীদের প্রতিনিয়ত তল্লাশি করছে পুলিশ। এতে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শহরের যানজট ও মাদক কেনাবেচা।
সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি বাজার থেকে বরগুনা আসার পথে চেকপোস্টে গাড়ির কাগজপত্র দেখানো মিরাজ খান বলেন, বিগত দিনে বরগুনায় এমন কড়া নিরাপত্তা দেখিনি। এমন উদ্যোগ আগে নিলে মাদক ব্যবসা, চুরি-ছিনতাই বন্ধ হয়ে যেত।
বরগুনার কেওড়াবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা বশির জানান, কিছুদিন আগেও আমাদের এলাকায় নিত্যনতুন মোটরসাইকেলে এসে মাদক সরবরাহ করে দ্রুত তারা চলে যেত। এখন এসব মোটরসাইকেল নিয়ে অল্প বয়সী ছেলেরাই বেশি আনাগোনা করেছে।
বরগুনার পিপি ভুবন চন্দ্র হাওলাদার জানান, রিফাত হত্যার পর বরগুনার সব আদালত মাদকে জড়িত আসামিদের জামিনের ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ। মাদক যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিয়েছে। হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ আমরা যাই বলি না কেন, এর পেছনে রয়েছে মাদক।
বরগুনা থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, কড়া নিরাপত্তা থাকার কারণে রিফাত হত্যা মামলার আসামিরা আস্তে আস্তে ধরা পড়ছে। বন্ধ হতে শুরু করেছে চুরি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসা।
বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, মাদক বহন ও বিক্রি থামাতে এমন অভিযান ও চেকপোস্ট সব সময় চলবে। রিফাত শরীফ হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের সব ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা।
রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।(তথ্য সূত্রঃ যুগান্তর)