ঝালকাঠিতে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ, ভিডিও ধারণ
ঝালকাঠিতে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের এক নারী কর্মীকে (১৯) দলবেধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হুমকি দিয়ে নির্যাতিত ওই যুবতীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে ধর্ষণকারীরা। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার আগলপাশা গ্রাম থেকে অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ ও নির্যাতিতর পরিবার জানায়, গত ২৯ জুন রাতে শহরের একটি ক্লিনিকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে আগলপাশা গ্রামের বখাটে রুবেল মোল্লা ও বিকনা গ্রামের মহিউদ্দিন খান মোটরসাইকেলে জোর করে ওই যুবতীকে তুলে নেয়। তারা চামটা গ্রামের একটি জঙ্গলের ভেতর পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায় ওই যুবতীকে। সেখানে অপেক্ষমান আরো তিনজনসহ পাঁচজনে দলবেধে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখা হয়। মেয়েটি হাত পা ধরেও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এ ঘটনা কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে বখাটেরা। নির্যাতিত ওই যুবতী বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে জানায়। তারা বখাটেদের ভয়ে ধর্ষণের বিষয়টি তাৎক্ষণিক কাউকে জানায়নি। গতকাল (৯ জুলাই) ফোন করে বখাটে রুবেল মোল্লা নির্যাতিত ওই যুবতীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চাইলে সে ঝালকাঠি থানায় গিয়ে পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রুবেল মোল্লা ও মহিউদ্দিন খানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া রুবেল মোল্লা সদর উপজেলার আগলপাশা গ্রামের মজিদ মোল্লার ছেলে এবং মহিউদ্দিন খান সদর উপজেলার বিকনা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। মামলার অপর আসামিরা হলেন চামটা গ্রামের রমজান তালুকদার, আগলপাশা গ্রামের ফাহিম খান ও শহরের বাদামতলা এলাকার মো. নুরু। অভিযুক্ত পাঁচজনই শহরের কলেজমোড় এলাকার ভাড়ার মোটরসাইকেল চালক।
নির্যাতিত ক্লিনিককর্মী বলেন, আমি ক্লিনিক থেকে রাত সাড়ে আটটার দিকে বের হয়ে কলেজমোড় এলাকায় যাই। তখন রুবেল মোল্লা আমাকে মোটরসাইকেলে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু রাতে আমি একা মোটরসাইকেলে যেতে রাজি হয়নি। আমি অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিছুক্ষণ পরেই রুবেল ও মহিউদ্দিন এসে আমাকে জের করে মোটরসাইকেলে তুলে মুখ চেপে ধরে নিয়ে যায়। একটি নির্জন জঙ্গলের মধ্যে পরিত্যক্ত ঘরে ঢুকিয়ে রাখে আমাকে। এরপর তারা পাঁচজন মিলে পর্যায়ক্রমে আমাকে ধর্ষণ করে। আমি তাদের হাতে পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চেয়ে প্রাণে বেঁচেছি। তারা পুরো ঘটনা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে হুমকি দিয়েছে। কাউকে জানালে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে। আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে তারা।
ঝালকাঠি থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। যারা ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত, তারা সবাই ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিন বলেন, ধর্ষণের ঘটনা মেয়েটি প্রথমে কাউকে জানায়নি। পরে তার কাছে টাকা চাইলে সে পুলিশকে জানায়। আমরা মামলা নিয়েছি। আসামিদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।