বরগুনায় ‘জিরো জিারো সেভেন’ এর গডফাদারদের খোঁজে গোয়েন্দারা
বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যে বেশকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। পাশাপাশি কিশোর গ্যাং গ্রুপ জিরো জিরো সেভেন এর পেছনে কারা ইন্ধন দিয়েছে এবং কজন গডফাদার রয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। আটককৃতদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ওই গডফাদারদের খোঁজে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দারা।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘাতকরা একাধিক বৈঠক করে বর্বর এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে ছক আঁকে। ‘রিফাত’ কিলিং মিশনের আগে তার স্ত্রী মিন্নিকে তার স্বজনদের কোপানোর হুমকি দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। পথ আটকে নাজেহাল, ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিয়েও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে স্বামী রিফাত শরীফ থেকে আলাদা করতে না পেরে ‘ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে’ পৈচাশিক হত্যাকাণ্ডের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে নয়ন। বিখ্যাত গোয়েন্দা জেমস বন্ডের অনুকরণে নিজের নামের শেষে বন্ড যুক্ত করে নয়ন বন্ড নামে পরিচিতি পাওয়া এই বখাটে (জিরো জিরো সেভেন) নামে একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ খোলে। অপকর্মের সঙ্গীদের করা হয় গ্রুপের সদস্য। ২০১৭/১৮ সালে স্থানীয় ক্রোক এলাকায় ২ কিশোরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাত পাকায় এ গ্রুপের সদস্যরা। স্থানীয় মুদি দোকানি নয়া মিয়াকে মারধরসহ একের পর এক অপকর্মের কারণে পুলিশের খাতায় তাদের নাম ওঠে। এলাকায় আতঙ্ক হিসেবে পরিচিতি পায় এই গ্রুপ। ৮ মামলার আসামি হয় গ্যাং লিডার নয়ন।
এদিকে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ১৩ জনকে শনাক্তের পর তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার বরিশালের লঞ্চঘাট থেকে আটক ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা কেউ চাই না, বরগুনার রিফাত হত্যার মতো কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটুক। এই ঘটনায় যত প্রভাবশালী লোকই জড়িত থাকুক না কেন, তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কারণ সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেছেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ঘাতকদের চিহ্নিত করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আসামিরা পুলিশের নজরদারিতে আছে। শিগগিরিই তারাও ধরা পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করনে তিনি।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, আসামিরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌ-বন্দরগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে জেলা পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, পিবিআই, সিআইডি ও ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট কাজ করছে।