প্রধান আসামি নয়নের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের বর্ণনা দিল বরগুনা পুলিশ
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডের (২৫) সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধের বর্ণনা দিল পুলিশ।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোর রাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের এই প্রধান আসামি। এ সময় পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও জানায় পুলিশ।
আহতরা পুলিশ সদস্যরা হলেন- বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন, বরগুনা সদর থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান, ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান ও বরগুনা পুলিশ লাইন্সে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মো. হাবিবুর রহমান। তাদের মধ্যে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেন ও বরগুনা সদর থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দুজনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুজনকে বরগুনা পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। এ সময় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা এলাকায় অবস্থান করছে। তারা পুরাকাটা সংলগ্ন পায়রা নদী দিয়ে ট্রলার যোগে বরগুনা সদর উপজেলা ত্যাগ করে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরে এমন তথ্যের ভিত্তিতে বরগুনার পাথরঘাটা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিএম আশ্রাফ উল্যাহ তাহেরের নেতৃত্বে ভোর ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে পুরাকাটার ঘটনাস্থলে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় নয়ন বন্ড তার ৫-৭ জন সহযোগীকে নিয়ে পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। পরে আত্মরক্ষার জন্য পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
পুলিশ সুপার বলেন, দুই পক্ষের গুলি বিনিময়ের একপর্যায়ে পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণকারীরা পিছু হটলে পুরাকাটা এলাকার মজিদ মিলিটারীর বাড়ির পূর্বপাশে পায়রা নদীর বেড়ি বাঁধের পাশে তল্লালি চলাকালে গুলিবিদ্ধ একটি মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ। এদিকে গোলাগুলির শব্দ পেয়ে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ডের বলে শনাক্ত করেন তারা।
তিনি আরো বলেন, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড পিস্তলের গুলি, দুটি শর্টগানের কার্তুজের খালি খোসা ও ৩টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, নয়ন বন্ডকে জীবিত গ্রেপ্তার করা গেলে তার নিজ হাতে গড়া গ্রুপ ০০৭ এর সদস্যদের সম্পর্কে সব তথ্য পাওয়া যেত। এক্ষেত্রে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নয়নকে যারা প্রশ্রয় দিয়েছে এবং তার গ্রুপে যারা সদস্য হিসেবে যুক্ত ছিলেন তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।(তথ্য সূত্রঃ কালের কন্ঠ)