আমার ছেলেকে পূর্বপরিকল্পিত হত্যা করেছে: রিফাতের বাবা
আমার একমাত্র ছেলে রিফাত শরীফকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই। এ ছাড়া আমার আর কিছুই চাওয়ার নাই।
বুধবার বরগুনার সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ছেলের খুনিদের এভাবেই শাস্তির দাবি জানান।
বাবা বলেন, স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না, প্রশাসনের কাছে একটাই অনুরোধ, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
তিনি বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর লোকমুখে শুনেছি খুনিরা ওখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে ছিল। তাদের হাতে ছিল রাম দা।
তিনি বলেন, নয়ন প্রতিনিয়ত আমার পুত্রবধূ আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে উত্ত্যক্ত করত এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দিত। এর প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে নয়ন তার দলবল নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, রোজ সকালে একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠি। সকাল ৯টায় আমার ফোনে তিনবার রিং বাজলেও আমি টের পাইনি। সকাল ১০টার পর আমি ঘুম থেকে উঠছি। রিফাতের চাচা শ্বশুরের ফোন পেয়ে হতবিহ্বল হয়ে যাই। পরে ফোনে জানি ছেলেকে কোপানো হয়েছে, তাকে অ্যাম্বুলেন্সে বরিশালে নেয়া হচ্ছে। তার পর বলি আমি যেতে পারব না।
তিনি বলেন, আমার যেহেতু হার্টের সমস্যা ডাক্তার আমাকে নিষেধ করেছেন জানাজায় পর্যন্ত না যেতে, মৃত্যু সংবাদও যেন আমাকে কেউ না বলেন। তাই আমি বাসায় রয়ে গেছি।
এর আগে বুধবার সকাল ১০টার দিকে স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নয়ন নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ৪-৫ দুর্বৃত্ত রিফাতকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় চিকিৎসক বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন বিকাল ৪টার দিকে রিফাত মারা যান। রিফাত বরগুনার বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা গ্রামের দুলাল ফরাজীর একমাত্র ছেলে।(যুগান্তর)