মাছ আহরনে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা পাথরঘাটাসহ উপকূলে জেলেদের ঈদ আনন্দ বঞ্চিত হওয়ার আশংকা
বরগুনার পাথরঘাটা সহ উপকূলের জেলেরা মৌসুম শুরুতেই ইলিশ আহরনে ৬৫ দিনের সরকারী বাধার সমুক্ষিন হয়েছে। মাছ ধরতে না পারলে জেলে শ্রমিক সহ সংশ্লিষ্ট সকল উপকূল বাসির ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে যাওয়ার আশংকা করছে জেলে, ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীরা। বাড়ছে হতাশা ও ক্ষোভ।
স্থানীয় জেলে ও ট্রলার মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলছেন, সারা বছরে ৫মাস ইলিশ ধারার সময় থাকলেও নতুনকরে ৬৫ দিনের অবরোধ আরোপে মৎস্য পেশায় সংশ্লিষ্টদের এখন মহা দুর্দিন।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে আজ ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ (২ মাস ৫দিন) দিন সাগরে সব ধরণের মাছ ধরা সম্পূর্নভাবে নিষেধাজ্ঞার জারি করা হয়েছে।
বছরের জৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত পাচঁ মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। জেলেরা ইলিশ ধরার বোট ও জাল মেরামত করে সাগরে যাওয়ার প্রস্ততির সময় এখনই। ইতিমধ্যে দাদন গ্রহন, এনজিওর কাছ থেকে ঋণ গ্রহন সবই শেষ।
মৌসুমের শুরুতে জেলেরা ফিশিং বোট ও জাল মেরামত করে সাগরে যাওয়ার প্রস্ততির শেষ সময়ে এবছর প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষনা দেয়। বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধের ঘোষনা রবিবার সারা উপক’লে মাইকে নিষেধাজ্ঞার কথা প্রচার করা হয়। এ কারনে শতশত ট্রলার সাগর থেকে ঘাটে ফিরে এসেছে। কাটাচ্ছ্ েআলস সময়।
রবিবার সরেজমিনে বিভিন্ন জেলেপল্লী ঘুরে জানাগেছে, নানা অভিমত। পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের জিনতলার গ্রামের জেলে আবুল ফরাজী জানান, মোরা সাগরকূলে থাইক্যা মাছ ধরা ছাড়া কিছুই জানিনা। কোন দক্ষতা নাই। বছরের আশ্বিন মাসে (৭-২৮ অক্টোবর) ২২দিন যায় মা মাছ রক্ষার নিষেধাজ্ঞায়, ৮ মাস চলে জাটকা নিধন প্রতিরোধ। এর পর জৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত পাঁচ মাস থাকে মাছ ধরার জন্য্। এসময়ে সামুদ্্িরক নিন্মচাপ,লঘুচাপ নানা দুর্যোগের বাধা মেনে নিয়ে ঝুকি নিয়ে মাছ ধরি। এর মধ্যে নতুন করে ৬৫ দিনে অবরোধ মোগো জানে মারার কৌশল করছে সরকার।
গত ঘুর্নিঝড় ফণীর প্রভাবে এক সন্তান ও মা হারা জেলে শ্রমিক চরদুয়ানী ইউনিয়নের মো. ইব্রাহিম রবিবার বিকালে জানান, ঈদ সামনে। মা এবং সন্তান হারালেও পরিবারে স্ত্রী ও অন্য সন্তান আছে। হাত শূন্য সাগরে যাওয়া সম্ভব না হলে ঈদ আনন্দ হবেনা নিশ্চিত। শহরের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরুন কর্মকার জানান হঠাৎ করে সরকারের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার ফলে আসন্ন ঈদ বাজারে মন্দা দেখা দিবে। প্রতিবছর সাগরে ইলিশের আমদানির উপর সকল ধরণের পণ্য বেচাকেনা নির্ভর করে। উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কোননা কোন ভাবে মাছ আহরন,পরিবহন বা ব্যবসার সাথে জড়িত।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, সরকার যে উদ্দেশ্যে নিশেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা আমাদের ইলিশ ধরার জন্য প্রযোজ্য নয় কারন আমরা ৪ ইঞ্চি ফাঁসের জাল দিয়ে মাছ ধরি। সমগ্র উপূকূলে আমরা প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মানববন্ধন করেছি। সরকারের কাছে আমাদের রক্ষার আবেদন করেও ফল পাইনি।