বামনায় ধর্ষন শেষে হত্যা মামলার আসামী ৮ বছর পর এলাকায়

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৭:০৬ পিএম, ৮ মে ২০১৯

বামনায় ধর্ষন শেষে হত্যা মামলার আসামী ৮ বছর পর এলাকায়

মা’কে বেধে রেখে ধর্ষন তার পরে জাম্বুরা গাছে ধুলিয়ে হত্যা অবশেষে জোর করে আত্নহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।

“বরগুনার বামনা উপজেলার ছােট ভাইজোরা গ্রামের হতভাগ্য জেনি আক্তার। প্রতিবেশী ইউপি সদস্য গােলাম
হায়দার হেমায়েত মৃধার ছেলে আপু মৃধা তাকে ধর্ষণের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে।

গত ১৯-০৭-১১ মঙ্গলবার রাতে এ পাশবিক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। চলাভাঙ্গা দারুস সালাম রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী জেনী আক্তার ছােট ভাইজোরা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মােতালেব হাওলাদারের মেয়ে। ধর্ষক গোলাম জিসান হায়দার ওরফে তাপু মৃধা (২২) উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি গােলাম হায়দার হেমায়েত মৃধার বড় ছেলে। ঘটনার পর থেকে তাপু মৃধা পলাতক। সেই থেকে ৮ বছর পালিয়ে ছিলো ইন্ডিয়া।

জেনির মা হাসিনা বেগম বলেন, গত সেইদিন রাতের খাওয়া শেষে জেনী ঘরের দােতলার পাটাতনে ঘুমিয়ে পড়ে নীচে শিশু পুত্রকে নিয়ে তিনিও ঘুমিয়ে পড়েন। আনুমানিক রাত সাড়ে তিনটার দিকে দোতলার পাটাতনে গােঙানী ও ধস্তাধস্তির শব্দ শুনে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। টর্চ লাইটের আলাে জ্বালিয়ে তিনি দোতলার পাটাতনে উঠে দেখেন তাপু তাঁর মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। এ সময় তিনি মেয়েকে রক্ষায় করতে এগিয়ে গেলে তাপু তাকে টর্চলাইট দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।

মেয়েকে রক্ষা করতে না পেরে তিনি বসতঘর হতে তিনশত গজ দুরে তাপুর বাবা গােলাম হায়দারের ঘরে সাহায্যের জনা দৌড়ে যান । সেখানে গােলাম হায়দার ও তাঁর পরিবারের লােকজন হাসিনা বেগমকে আটকে রাখেন দেড়ঘন্টা পরে তাকে তারা ছেড়ে দেন। সেখান থেকে ছুটে এসে নিজ ঘরের পিছনে জাম্বুরা গাছে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান হাসিনা।

হাসিনা আরও বলেন, দুই বছর ধরে তাপু মৃধা তাঁর মেয়েকে প্রেম নিবেদন করে উত্যক্ত করে আসছিল। তাপুর
পরিবারের কাছে বহুবার নালিশ করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে ধর্ষণের দুইমাস আগে মেয়ের মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। বখাটে তাপুর হাত থেকে বাঁচতে মেয়ের বিয়েও ঠিক করেন। বিয়ের খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে বহুদিন ধরে তাপু তাদের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকী দিতে থাকে যাতে বিয়ে না দেওয়া হয় জেনি’কে

গ্রামবাসি জানায়, ওই রাতে ঘরে কোন পুরুষ লােক ছিল না। নিহত জেনীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মােতালেব হাওলাদার ঢাকায় একটি গার্মেন্টে চাকুরী করতেন ততকালীন বামনা থানার উপপরিদর্শক মাে: হারুন অর রশীদ বলেন, ওই মাদরাসাছাত্রীকে খুণের আলামত পাওয়া গেছে। পরে তাকে শ্বাস রােধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত মূল আসামী তাপু মৃধার বাবা, মা ও দুই আত্মীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছিলো তাপুকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যহত থাকলেও তাপু আইনের চোখ ফাকি দিয়ে দেশ ছেড়ে ইন্ডিয়া পালিয়ে যায়।

প্রধান আসামী পলাতক, পুলিশ ঐ সময় তাপু’কে গ্রেফতার না করে তাপুর বাবা ও মা,কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রাম বাসী জানান তারা খুব সহজেই আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবে। তার উপর আবার সরকারী দলের হাত আছে এই নেতার উপর, তাই এই বিষয়ে সর্বোচ্চ যা হতে পারে, তা হলাে কিছু টাকা-পয়সার বিনিময়ে। অন্যদিকে হায়দার হোসেন হেমায়েত মৃধা বর্তমান সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের মামাতো ফুপাতো ভাই। যার যোগ বিয়োগের হিসাব দাঁড়ায় ধর্ষক তাপু মৃধা সম্পর্কের ভাতিজা।
আপন ভাতিজা না হলেও তার চেয়েও বেশি প্রভাব বিস্তার খাটাতো তাপু ততকালীন কাকচিড়া, লেমুয়া,বামনা,ডউয়া তলা, অঞ্চলের মাধকের গড ফাদার ছিলো এই তাপু কিন্তু পুলিশের খাতায় তার কোন নাম ছিলোনা। তবে ৮ বছর পরে তাপু আবারো এলাকায় এসে রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছে পুলিশের খাতায় মামলা থাকলেও তার কোন রিয়াকশন নেই তাপুর বিরুদ্ধে। বর্তমান সংসদ সদস্যের ছায়া তলে আবারো রাজনীতিতে যোগ হয়েছে তাপু

মামলা ২ বছর পরে মামলা তুলে নিতে জেনীর পরিবারের উপর চলমান থাকে সর্বাত্মক নির্যাতন।
মামলা তুলে নেওয়ার পর অমানুষ তাপু দ্বারা আবারাে যেনো কোন জেনী’কে ধর্ষন শিকার না হতে হয় এমন কথা ভেবে জেনির মা ও বাবা মামলা তুলে নেননি গত ৮ বছর অপেক্ষায় রয়েছেন তাপুর বিচার হবে মরার আগে মেয়ের হত্যার বিচার চেখে মরতে চাই এমনি জানান জেনির মা হাসিনা।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)