দুর্যোগ প্রবণ বরগুনায় নেই আবহাওয়া অফিস
দুর্যোগ প্রবণ জেলা হওয়া সত্ত্বেও বরগুনায় এখন পর্যন্ত নির্মাণ হয়নি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত নির্ণয় করাতো দূরের কথা বৃষ্টির পরিমাপ, বাতাসের গতিবেগ নির্ণয়েরও নেই কোনো ব্যবস্থা।
ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বার বার বিপর্যস্ত হচ্ছে এই জনপদ। ঢাকা থেকে বার্তা সংরক্ষণ করে যেসব সংগঠনগুলো আবহাওয়ার সংবাদ পৌঁছাচ্ছে, তারা বলছে- আবহাওয়া অফিস না থাকার কারণে সময় মতো সঠিক বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না তারা।
এদিকে সচেতন মহলের দাবি- যারা আবহাওয়ার সংবাদ জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছেন, তারাও দিচ্ছেন ভুল তথ্য ।
জানা গেছে, বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে সাগর উপকূলীয় জেলা বরগুনা। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগে বার বার বিপর্যস্ত হচ্ছে এসব জনপদ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে বরগুনা চিহ্নিত হলেও এখন পর্যন্ত নির্মাণ হয়নি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস।
ফলে বিগত দিনের ঘূর্ণিঝড় সিডর, মহাসেন, আইলা, রোয়ানু ও মোরার সময় আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্যের সঙ্গে বে-মিল ছিল বন্যার গতি ও স্থান পরিবর্তনের। যার প্রভাবটাও পড়েছে উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণের উপর।
পাথরঘাটা উপজেলার আবুল হোসেন ফরাজী, আলম ফিটার, বুলবুল হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় বার বার ভুল তথ্য দেয়া হয়। এ কারণে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণও দ্বিগুণ হয়।
বরগুনা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী জানান, সঠিক সময়ে আবহাওয়ার সংকেত না পাওয়ার জন্য তারাও গভীর সাগরে থাকা জেলেদের তথ্য দিতে পারেন না। তাই প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০ জন জেলে ট্রলার ডুবিতে মারা যাচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুত কর্মসূচি (সিপিপি) বরগুনার উপ-পরিচালক কিশোর কুমার সরদার ব জানান, আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস না থাকায় সব থেকে বেশি ভোগান্তি ও বন্যা পরবর্তী সময়ে তাদের জনগণের তোপের মুখে পড়তে হয়।
বরগুনা লোকবেতারের স্টেশন ম্যানেজার মনির হোসেন কামাল ব আবহাওয়ার তথ্য ঢাকা থেকে সংগ্রহ করতে যে সময় লাগে ততক্ষণে অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই বরগুনায় আবহাওয়া অফিস নির্মাণ না করা পর্যন্ত এসব সমস্যার সমাধান হবে না।
তবে এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ জানান, আবহাওয়া অফিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। দ্রুত আবহাওয়া অফিস হবে বলেও জানান তিনি।