পাথরঘাটায় উপজেলা সাস্থ কমপ্লেক্স থেকে রোগীকে মাধক সেবী বলে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা শ্রমিক-ব্যাবসায়ীরা চিকিৎসা নিতে এসে দূরব্যাবহারের শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার সকালে এরকম ঘটনা ঘটেছে ,অভিযোগ উঠেছে পাথরঘাটা উপজের মৃত আলহাজ্ব রুহুল আমীন খানের পুত্র পাথরঘাটা বিএফডিসির মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের আল আরকে ফিসের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ নাজমুল হাসানকে চিকিৎসা না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক আনোয়ার উল্লাহর বিরুদ্ধে।
সূত্র বলছে, বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় দের লাখ সাধারন মানুষ। রোগী আছে কিন্তু নেই কোনো ডাক্তার। হাসপাতালে কর্মরর্ত ডাক্তাররা তাদের দায়িত্ব পালন না করে তাদের চেম্বারে ওষুধ কম্পানীর লোকেদের সাথে সময় গল্প করে সময় পার করার অভিযোগ উঠেছে। কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত থাকার জন্য সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকার পরও তোয়াক্কা করছেন না এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। এদিকে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা ভেঙ্গে পরেছে।
সেবা নিতে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। আবার চিকিৎসা সংকটে হাসপাতালে মারা যাচ্ছে অনেক রোগী। গতকাল শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে পাথরঘাটা পৌরশহরের শেখ রাসেল স্কয়ারে ঘন্টাব্যাপী “ইলিশ ধরার ৬৫ দিনের অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে” একটি মানববন্ধনে জেলা মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতিসহ সকল জেলে শ্রমিক ও মৎস্য ব্যবসার সাথে জড়িত কয়েক হাজার জেলে অংশ নেয়। তীব্র গরমে হিটস্ট্রোক করে মানববন্ধনে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন জেলে ও মৎস্য ব্যাবসায়ী অসুস্থ্য হয়ে পরেন। পরবর্তীতে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
অসুস্থ্য জেলে ও ব্যাবসায়ীদের হাঁসপাতালে নিয়ে গেলে কোন ডাক্তার অথবা নার্সের দেখা মেলেনি। প্রায় কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করার পরে হাঁসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আনোয়ার উল্যাহ এসে অসুস্থ্য রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে উল্টো তাদের সাথে দূরব্যাবহার করতে শুরু করে। ভূক্তভুগী রোগী মোঃ নাজমুল হাসান খাঁন জানান, মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করার সময় আমি অসুস্থ্য হয়ে পরলে আমাকে নিয়ে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরেও কোনো ডাক্তার,নার্স না আসায় আমি আমার বন্ধুকে ফোন করে আসতে বলি, পরবর্তীতে আমার বন্ধু এসে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে ডাঃ আনোয়ার উল্যাহ স্যারকে আমার চিকিৎসা করতে বললে তিনি আমাকে মাদকাসক্ত বলে অপবাদ দিয়ে গালাগালি করতে শুরু করে।
এরপর তিনি আমার বন্ধুকে বলতে শুরু করে যে আপনার বন্ধু মাদক সেবন করে এসেছে, তাকে এখন পুলিশে সোপর্দ করবো। এসময় আমার বন্ধু ডাঃ আনোয়ার উল্যাহকে বলেছিল যে আমার বন্ধুর শরীরে মাদক আছে কিনা তার প্রাম্ন আমি নিয়ে আসছি। তখন তাকে প্রমান দেয়ার জন্য আমাকে নিয়ে বরিশাল প্রাইভেট ক্লিনিক বেলভিউর মেডিসিন চিকিৎসক ডঃ সুব্রত চক্রবর্তীকে দিয়ে আমার শরীরের টেস্টের মাধ্যমে প্রমান পত্রের ব্যাবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে ।
এব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা গোলাম কবির বলেন,আজকের মানববন্ধন ছিল সাধারন জেলে এবং ব্যাবসায়ীদের ন্যায্য অধিকার সম্পর্কিত,মানববন্ধন চলাকালীন তীব্র রোদ্রের তাপে হিটস্ট্রোকে কয়েকজন জেলে অসুস্থ্য হয়ে পরেছিল পরবর্তীতে তাদের উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল,কিতু তাদের সাথে কর্তব্যরত চিকিৎসক যে এমন ব্যাবহার করবে সেটা একদমই ঠিক করেনি,আমি এ বিষয়ে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অবহিত করবো।
এ ঘটনায় পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডঃ আনোয়ার উল্যাহ’র বক্তব্যের জন্য তাকে একাধিকবার ফোন করলেও তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি,তার নাম্বার ০১৭১৫………৬৫০ ।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাসুমুল হক খানের সাথে এব্যাপারে কথা বললে তিনি জানান, এত বড় উপজেলায় দু’জন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল চালানো খুবই কষ্টসাধ্য। চিকিৎসকের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার চাহিদা পাঠানো সত্ত্বেও কোনো ফল হচ্ছে না।হয়তোবা সেই কারণেই রোগীরা ডাক্তারদের ঠিক সময় পাচ্ছেনা, তবে এরকম ঘটনা আগামীতে আর হবেনা বলে জানান তিনি।
সুত্রঃ দৈনিক বরিশাল টুয়েন্টিফোর. কম