রানা প্লাজা ধসের ৬ বছর পাথরঘাটার মরিয়ম ও দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ,
প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৯

পাথরঘাটার মরিয়ম ও দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা
স্বামী তালাক দেওয়ার পর দুই সন্তান নিয়ে ভেঙে
পড়েননি মরিয়ম আবার নতুন জীবন শুরু করেন রানা
প্লাজায় এক তৈরি পােশাকের কারখানায় পােশাকশ্রমিক
হিসেবে যােগ দেন তিন বছর কাজ করার পর দুই সন্তানকে নিয়ে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেন।

কিন্তু আবার স্বপ্নভঙ্গ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে নয়টার দিকে রানা প্লাজা ধসে যায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে দেড় দিন পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার করেন মরিয়মকে। তবে হারাতে হয়েছে ডান হাত

মরিয়ম বেগম (৩৫) বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের কালীবাড়ি গ্রামের আলী হােসেনের মেয়ে। তিনি রানা প্লাজার সপ্তম তলার একটি কারখানায় সুইং অপারেটরের কাজ করতেন

ছয় বছর আগের সেই বিভীষিকার কথা মনে করতে গিয়ে শিউরে ওঠেন মরিয়ম তিনি বলেন, সকাল ৮টায় রানা প্লাজায় কাজে যােগ দেন। পৌনে ৯টার দিকে রানা প্লাজার ধসের ঘটনা ঘটে, এ সময় সিট ছেড়ে টেবিলের নিচে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ওই সময় দ্রুত ওপরের ছাদ ধসে পড়ে তাদের ওপর

ওই ছাদের আঘাতে ডান হাতের কনুইয়ের ওপর থেকে হাত ভেঙে যায়, পরবর্তী সময়ে অস্ত্রোপচার করে ওই হাতের কনুই থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়। পরে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন তিনি বলেন, ‘তবে এ ঘটনার পরেও আমি হার মানিনি কিন্তু দুই সন্তানের অজানা ভবিষ্যতের শঙ্কায় এখন হার মানতে প্রতিনিয়ত বাধ্য হচ্ছি।’পরিবারের সদস্যরা বলেন, মরিয়ম বেগম বাবা আলী হােসেনের বাড়িতেই ছয় বছর ধরে রয়েছেন, এ বাড়িতে থেকেই মরিয়মের মেয়ে সুমাইয়া ও ছেলে মাইনুদ্দিন এন আই খান রেসিডেনশিয়াল স্কুলে পড়াশােনা করছে।

দুই সন্তানের লেখাপড়া চালাতে ও
সংসারের খরচ জোগাতে দিশেহারা মরিয়ম বেগম
মরিয়মের ভাই সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকারিভাবে পাওয়া সহায়তার টাকা দিয়ে বাড়ির সামনে মুদির দোকান দিয়েছিলেন মরিয়ম, গ্রামের মানুষের বাকি দিতে হতাে, না হলে ব্যবসা করা কঠিন আবার ব্যবসার পুঁজি হাতে থাকলেও মানুষকে টাকা ধার দিতে হয়। টাকা ধার দিলে সহজে কেউ ফেরত দেন না, ফলে লাভের মুখ দেখেননি তার বােন। মেয়ে সুমাইয়া বলে, তাঁর মা তিন লাখ টাকা দিয়ে একটি ছােট পাকা ভবন নির্মাণ করছেন কাজ এখনাে শেষ হয়নি তাদের দুজনের ভবিষ্যৎ চিন্তায় মা শঙ্কিত।

উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীনবলেন, মরিয়মকে তাঁরা হার মানতে দেবেন না এবার
প্রশাসনের উদ্যোগে ও সার্বিক সহযােগিতায় শহরে আরেকটি দোকান দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
সুত্রঃ প্রথম আলো

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)