প্রশ্নফাঁস-নকল ঠেকাবে ‘ই-প্রশ্ন

অনলাইন ডেস্কঃ বর্তমান সময়ে দেশের আলোচিত বিষয়গুলোর একটি হলো প্রশ্ন ফাঁস। আর এই ফাঁস ঠেকাতে ইন্টারনেটের গতি কমানো ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করেছিল সরকার। তবে এসব থেকে পিছু হটতে হয়েছে। সবশেষ পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে ঘোরাফেরার বিষয়ে কঠোর হয় সরকার। তারপরও থামছে না প্রশ্ন ফাঁস।
সেই প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতেই এবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া বেসিস সফটএক্সপোতে নতুন একটি প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছে কপোট্রনিক ইনফোসিস্টেমস লিমিটেড নামে এক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির নীতিনির্ধারকদের দাবি, এই প্রযুক্তি ব্যবহারে থামবে প্রশ্নফাঁস ও নকল।
অনলাইন ডেস্কঃ ২২ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার কপোট্রনিকের স্টলটিতে গিয়ে জানা গেছে, প্রশ্নফাঁস রোধে তাদের ডিভাইসটির নাম ই-প্রশ্ন। এটি চলিত প্রশ্ন রীতির ধারণা পাল্টে দেবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিতে বসবে তাদের হাতে দেয়া হবে এই ডিভাইসটি। যখন পরীক্ষা শুরু হবে তখন আপনাপানি এই ডিভাইসের স্ক্রিনে প্রশ্ন ভেসে উঠবে। পরীক্ষার্থী এই প্রশ্নে পরীক্ষা দেবে। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থী ডিভাইসটি পরীক্ষা কেন্দ্রে রেখে চলে যাবে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইমরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এটি মূলত একটি ট্যাব। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর। এই ডিভাইসটি প্রশ্নের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হলে একজন শিক্ষার্থীকে গতানুগতিক ধারার রেজিস্ট্রেশনের মতোই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীকে তার ফিঙ্গার প্রিন্টটিও দিতে হবে।’
‘এই ডিভাইসটির মাধ্যমে কীভাবে প্রশ্নফাঁস ঠেকানো যাবে?’ এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার্থী হলে ঢোকার পর বোর্ড নির্ধারণ করবে পরীক্ষার্থী কোন সেট অনুযায়ী পরীক্ষা দেবে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে বোর্ড নির্ধারণ করল তারা “খ” সেটে পরীক্ষা নেবে। তখন ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত এই ডিভাইসটির স্ক্রিনে “খ” সেটের প্রশ্ন দেখাবে। ইন্টারনেট যুক্ত হলেও এই ডিভাইসটিতে শুধু প্রশ্ন দেখা যাবে, অন্য কিছু করা যাবে না। সেই সঙ্গে সবার প্রশ্নের ক্রমিক নম্বর মিলবে না। এতে হাত উঁচু করে বা ইশারার মাধ্যমে নকলও করতে পারবে না শিক্ষার্থীরা।”
‘ডিভাইসটির স্ক্রিনের আলো পরীক্ষার্থীদের চোখের জন্য ক্ষতিকর হবে কি না?’-এমন প্রশ্নের উত্তরে ইমরুল বলেন, ‘এটি শিক্ষার্থীদের জন্য রিডেবল করে তৈরি করা হয়েছে। আর পরীক্ষা তো হয় শুধু ৩ ঘণ্টা। অথচ এই সময়ের বাইরে শিক্ষার্থীরা বাসায় অনেক সময় ধরে নানা ডিভাইস ব্যবহার করে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিভাইসটিতে একনাগাড়ে চার্জ থাকবে ১৩ ঘণ্টার বেশি সময়। এ ছাড়া এটি কয়েক বছর ব্যবহার করা যাবে। ফলে প্রশ্নপত্র ছাপানো, প্রশ্নপত্র পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানোর খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচ কমে যাবে। সেই সঙ্গে কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়ার সময় এই ডিভাইসটির যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে সাথে সাথে পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় থেমে যাবে। পরে ওই শিক্ষার্থীকে অন্য ডিভাইস দেয়ার পর আবার সেই সময় থেকে পরীক্ষা শুরু হবে।’
এই ডিভাইসটির কিছু জিনিস দেশের বাইরে থেকে নিয়ে আসা। তবে এর সমন্বয়ের পদ্ধতি তাদের তৈরি। এর প্রাথমিক মূল্য ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত পড়তে পারে। এই ডিভাইসটির মাধ্যমে নকল পরীক্ষার্থীও পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে ডিভাইসটির মাধ্যমে ইমেজ প্রশ্ন, ভিডিও প্রশ্ন, অডিও প্রশ্ন করা যাবে বলেও যোগ করেন তিনি।
ডিভাইসটির বিষয়ে স্টলটির সামনে থাকা সাফকাত নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘আমার কাছে বিষয়টি ভালো মনে হয়েছে। টেকনোলজিটি যদি ইন্ট্রোডিউস হয় তবে এটি লং লাস্টিং হবে বলে আমার মনে হচ্ছে।
সুত্রঃ প্রিয়ডটকম/এ এম বি / পাথরঘাটা নিউজ