আঘাত হানতে পারে একাধিক ঘূর্ণিঝড়
মাসের শুরুতেই আকাশে দুর্যোগের কালো মেঘ। এপ্রিলেই বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপের দেখা মিলতে পারে, আঘাত হানতে পারে একাধিক ঘূর্ণিঝড়। এ ছাড়া তিনটি তীব্র ঝড়, যা কালবৈশাখীতে রূপ নিতে পারে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে। আবার এ মাসেই দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বয়ে যেতে পারে দুটি তীব্র দাবদাহ। অন্যত্র বইবে মাঝারী তাপপ্রবাহ।
এ মুহূর্তে পশ্চিমা লঘুচাপ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ ভূখণ্ডে অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে বৈশাখের আগেই ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু স্থানে অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে শিলা ও বজ্রঝড়ের শঙ্কাও রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন তথ্যই জানিয়েছে।
বিদ্যমান বাস্তবতা বলছে, প্রকৃতির দুয়ারে সমান্তরালে বইছে বসন্ত বাতাস, বৃষ্টি, কালবৈশাখী আর দাবদাহ। এ মাসেই বইবে দাবদাহ, তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে। একদিকে বিকশিত কাঞ্চন ফুল, ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল, কোকিলের গান, পলাশ আর শিমুলের মেলা। অন্যদিকে গগনে গরজে মেঘ ঘন বরষা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্প বেড়ে যাওয়ায় এগিয়ে আসছে তীব্র ঝড়, কালবৈশাখী আর দাবদাহ।
সার্বিক পর্যবেক্ষণে ঋতুবৈচিত্র্যের অংক মিলছে না। চিরচেনা বসন্তকালকে অচেনা করে তুলছে বৃষ্টি। গতকালও রাজধানীসহ দেশের অনেক জেলায় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। আর সপ্তাহখানেক ধরে রাত নেই দিন নেই, বৃষ্টি ঝরছেই। মেঘের কোলে রোদ হাসলেও তা যেন লুকোচুরির খেলা। আবহাওয়ার এমন হেয়ালীপনার কারণে জরা-ব্যাধির জঞ্জালও এসে পড়ছে চৈত্রে। গরম অনুভূত তথা ঋতুবদলের বসন্ত-বাতাস বইতে না বইতে দেখা দিচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগ।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নন জানান, প্রবহমান শীত শীত আমেজে বৃষ্টি থাকতে পারে টানা তিনদিন। পূবালী বাতাসের সঙ্গে পশ্চিমা বাতাসের মিলন ঘটলে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তবে বৃষ্টি বেশি হলেও গরম কিন্তু ছাড় দেবে না। বসন্ত এবং বৃষ্টির এই লুকোচুরির ভাটা পড়বে এ মাসের শেষে। বৃষ্টির পরই আসছে গরম।
বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ‘পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার সংরক্ষণ ও উন্নয়নে সরকার-সংশ্লিষ্টরা নানা কথা বললেও তা বক্তৃতা-বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমরা এমন একটা ইস্যু নিয়ে সোচ্চার হচ্ছি না, যা আমাদের জীবনের জন্য। আজ বৈশ্বিক উষ্ণতার শিকার বাংলাদেশের মানুষ। এর পরিণতি ভয়াবহ। দুঃখজনক বিষয় হলো এই যে, আমরা জীবন নিয়ে খেলছি।’