পাথরঘাটায় তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চান না (ভিডিও)
২৬ বছর যাবত নিয়েছেন বেতন ভাতা কিন্তু ক্লাসে পড়ায়নি কোন দিন। এমনকি স্কুলের কোন ছাত্র ছাত্রী জানেও না সে এই মাদ্রাসার শিক্ষক। মাদ্রাসায় না আসলেও মাদ্রাসায় এলাকায় থাকায় প্রতিদিন লাঞ্চিত হয় কোন না কোন ছাত্রী তার কু- প্রস্থাবে রাজি না হলে দেয় বিভিন্নভাবে হুমকি এমন ঘটনা ঘটেছে বরগুনা জেলার পাথরঘাটার উপজেলার আমড়াতলা গ্রামের একমাত্র দাখিল মাদরাসায়।
প্রতিদিন সকালে শরীরে তোয়ালে জরিয়ে মাদরাসায় এসে ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান তিনি। আবার অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা জানান তাদের মাদরাসায় ফিরোজ নামের কোন শিক্ষক আছে তা তারা জানেন না। মাদ্রাসায় পড়ার বয়স ৮ বছরের ছাত্র ছাত্রীদের মুখেও এমন কথা শুনিনি এই নামের কোন শিক্ষক আছে এই মাদ্রাসায়।
নবম শেনীর জহিরুল ইসলাম, সারমিন, মারিয়া, অস্টম শ্রেনীর হাসান, ষষ্ঠ শ্রেনীর আয়সা আক্তার, কারিমা পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, আমরা এই মাদরাসায় ভর্তি হয়েছি ৭ থেকে ৮ বছর আগে কিন্তু ফিরোজ যে আমাদের স্যার তা আমারা আপনাদের কাছে শুনেছি। মাঝে মাঝে দেখি সে মাদরাসায় আসে এবং হুজুরদের (শিক্ষক) সাথে জগড়া করে চলে যায়। আমরা কখনো দেখিনি আমাদের ক্লাস নিতে।
শ্লীলতাহানীর স্বীকার ছাত্রীরা পাথরঘাটা নিউজকে জানান, এর আগে ভিবিন্ন সময় ফিরোজ তাদেরকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছে। তার ওই প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সে তাদের শ্লীলতাহানী ঘটিয়েছে। পরে আমরা যেন কারো কাছে না বলি তার জন্য আমাদেরকে ফিরোজ বিভিন্ন রকমের ভয় দেখিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক শিক্ষক পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, মাদরাসার সকলেই জানে ফিরোজ একটি খারাপ প্রকৃতির লোক। আমরা চাই মাদরাসার ছাত্রী লঞ্চিতের জন্য ও শাস্তি পাক। যাতে করে আর মেয়েদের শরীরের দিকে কুদৃস্টি দেয়ার সাহস না পায়। তার বিরুদ্ধে মাদক, ধর্ষণসহ একাধীক অভিযোগ আছে। সে পারেনা এমন কিছু নেই তাই তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
ফিরোজ মাদরাসায় ক্লাস না করে গত ২৬ বছর ধরে বেতন তুলে নিয়ে যায় আর ওই বেতন নিতে যদি সুপার স্বাক্ষর না দেয় তবে মাদরাসার সুপারসহ সকল শিক্ষকদের শারিরীক ভাবেও লাঞ্চিত করে থাকে।
আমড়াতলা দাখিল মাদরাসার সুপারিয়েনডেন্ট মাওলানা ফারুক হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, ফিরোজ সরকারী দলে হওয়ায় মাদরাসায় বেশী প্রভাব খাটায়। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না। সে নিজে তার মাদরাসার ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর কথা শুনেছেন এবং ওই ছাত্রীর অবিভাবকও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তাছাড়া ফিরোজ বছরে একদিনও মাদরাসায় ক্লাস করান না। প্রতিদিন সকালে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলেন যান। আমি যদি স্বাক্ষর দিতে না দেই তবে আমাকে লাঞ্চিত করে এমনকি আমাদেরকে মাদরাসা থেকে বেরও করে দিতে পারে।
তিনি আরো জানান, ফিরাজ একাধীকবার মাদকসহ পুলিশের কাছে ধরা পরেছে এবং জেলও খেটেছে।
এলাকায় মাদকাসক্ত হচ্ছে তার কারনে অনেক যুবক
আগে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো। পড়ে ইয়াবা সহ ধরা পড়লে ব্যবসা ছেড়ে সেবন কারীর খাতায় লিখিয়েছেন নাম।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ এর কাছে যানতে চাইলে তিনি পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা, আমি ওরকম কোন মেয়েকে শ্লীলতাহানী করিনি। কাউকে ভয়ভীতিও দেখাইনি। স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও স্বাক্ষর দেয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটা মামলার কারনে আড়াই মাস ধরে মাদ্রাসায় আসতে পারিনি তাই হয়ত তারা এ কথা বলেছে।
পাথরঘাটা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. মনিরুল ইসলাম অভিযোগর সত্যতা স্বীকার করে পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, এরকম অভিযোগ আমার কাছেও আছে। তারা দুই ভাই দুই জনেই একই মাদ্রাসার শিক্ষক তার ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই মোস্তফা জামান জহির মাঝে মাঝে ক্লাস করেন কিন্তু ফিরোজ আধৌ কখনও ক্লাস করেন না। আমরা দুএকদিনের মধ্যেই ব্যাবস্থা নিব।।