২৬ বছর ক্লাস না করেই সরকারী অর্থ আত্নসাত পাথরঘাটায় আওয়ামীলীগ নেতার হাতে মাদরাসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ (ভিডিও সহ)
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় আমড়াতলা দারুল উলুম হোসাইনিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ফিরোজের বিরুদ্ধে মাদরাসা ছাত্রীদে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ পাওয়া পাওয়া গেছে। এছারাও ওই শিক্ষক ফিরোজ ১৯৯৪ সাল থেকে মাদরাসায় ক্লাস না করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন ভাতা তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে একাধীকবার মাদকসহ পুলিশের কাছে আটক হয়েছে। তিনি সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের লোক হওয়ায় আইনের ফাক থেকে বের হয়ে আসছেন এবং এর প্রতিবাদ করলেই শিক্ষকদেরকে ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই মাদরাসা সুপারসহ শিক্ষকদের শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করে বলে যানা গেছে। তাছারা তার ভাই মোস্তফা জামান জহির একই ভাবে ক্লাস না করে বেতন তুলছেন।
মোস্তফা জামান জহির কালমেঘা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি, ফিরোজ কালমেঘা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য তারা দুজন আমড়াতলা গ্রামের মৃত চান মিয়া হাওলাদার এর ছেলে।
সারেজমিনে মাদরাসায় গিয়ে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফিরোজ ইবতেদায়ী বিভাগের শিক্ষক। সে ১৯৯৪ সালের সেপ্টম্বর মাসের ৮ তারিখ ওই মাদরাসায় যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি প্রতিমাসে ১০ হাজার ৬শ ৮০টাকা বেতন তোলেন। এতে সে প্রায় ক্লাস না করে ৩০ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন। ফিরাজ প্রতিদিন সকালে শরীরে তোয়ালে জরিয়ে মাদরাসায় এসে ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যায়। আবার অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা জানান তাদের মাদরাসায় ফিরোজ নামের কোন শিক্ষক আছে তা তারা জানেন না।
নবম শেনীর জহিরুল ইসলাম, সারমিন, মারিয়া, অস্টম শ্রেনীর হাসান, ষষ্ঠ শ্রেনীর আয়সা আক্তার, কারিমা পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, আমরা এই মাদরাসায় ভর্তি হয়েছি ৭ থেকে ৮ বছর আগে কিন্তু ফিরোজ যে আমাদের স্যার তা আমারা আপনাদের কাছে শুনেছি। মাঝে মাঝে দেখি সে মাদরাসায় আসে এবং হুজুরদের (শিক্ষক) সাথে জগড়া করে চলে যায়। আমরা কখনো দেখিনি আমাদের ক্লাস নিতে। সে যদি মাদরাসার শিক্ষক হত তবে আমরা জানতাম।
শ্লীলতাহানীর স্বীকার ছাত্রীরা পাথরঘাটা নিউজকে জানান, এর আগে ভিবিন্ন সময় ফিরোজ তাদেরকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছে। তার ওই প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সে তাদের শ্লীলতাহানী ঘটিয়েছে। পরে আমরা যেন কারো কাছে না বলি তার জন্য আমাদেরকে ফিরোজ বিভিন্ন রকমের ভয় দেখিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধীক শিক্ষক পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, মাদরাসার সকলেই জানে ফিরোজ একটি খারাপ প্রকৃতির লোক। আমরা চাই মাদরাসার ছাত্রী লঞ্চিতের জন্য ও শাস্তি পাক। যাতে করে আর মেয়েদের শরীরের দিকে কুদৃস্টি দেয়ার সাহস না পায়। তার বিরুদ্ধে মাদক, ধর্ষণসহ একাধীক অভিযোগ আছে। সে পারেনা এমন কিছু নেই তাই তার ভিরুদ্ধে কেউ মুল খুলতে সাহস পায় না। ফিরোজ মাদরাসায় ক্লাস না করে গত ২৬ বছর ধরে বেতন তুলে নিয়ে যায় আর ওই বেতন নিতে যদি সুপার স্বাক্ষর না দেয় তবে মাদরাসার সুপারসহ সকল শিক্ষকদের শারিরীক ভাবেও লাঞ্চিত করে থাকে।
আমড়াতলা দাখিল মাদরাসার সুপারিয়েনডেন্ট মাওলানা ফারুক হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, ফিরোজ সরকারী দলে হওয়ায় মাদরাসায় বেশী প্রভাব খাটায়। তার ভিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না। সে নিজে তার মাদরাসার ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর কথা শুনেছেন এবং ওই ছাত্রীর অবিভাবকও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তাছারা ফিরোজ বছরে একদিনও মাদরাসায় ক্লাস করান না। প্রতিদিন সকালে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলেন যান। আমি যদি স্বাক্ষর দিতে না দেই তবে আমাকে লাঞ্চিত করে এমনকি আমাদেরকে মাদরাসা থেকে বেরও করে দিতে পারে। তিনি আরো জানান, ফিরাজ একাধীকবার মাদকসহ পুলিশের কাছে ধরা পরেছে এবং জেলও খেটেছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা, আমি ওরকম কোন মেয়েকে শ্লীলতাহানী করিনি। স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও স্বাক্ষর দেয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটা মামলার কারনে আড়াই মাস ধরে মাদরাসায় আসতে পারিনী তাই হয়ত এ কথা বলেছে।
পাথরঘাটা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. মনিরুল ইসলাম অভিযোগর সত্যতা স্বীকার করে পাথরঘাটা নিউজকে বলেন, এরকম অভিযোগ আমার কাছেও আছে। তারা দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই মোস্তফা জামান জহির মাঝে মাঝে ক্লাস করেন কিন্তু ফিরোজ আধৌ কখনও ক্লাস করেন না। আমরা দুএকদিনের মধ্যেই ব্যাবস্থা নিব।
ভিডিওতে দেখুন শুনুন তাদের কার্যক্রম