মঠবাড়িয়ায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর অবৈধ গর্ভপাতে মৃত্যু !
মঠবাড়িয়ায় ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অবৈধ গর্ভপাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হেলেনা আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অভিযুক্তরা গ্রাম্য এক চিকিৎসকের দ্বারা গর্ভপাত ঘটালে তার অকাল মৃত্যু ঘটে। এ অভিযোগে পুলিশ উপজেলার টিয়ারখালী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিহত ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে গতকাল শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠিয়েছে।
এ ঘটনায় নিহত ওই কিশোরীর দিনমজুর বাবা আ. কুদ্দুছ মুন্সী বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ আলমগীর হোসেনকে (৪০) স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক গ্রেফতার করেছে ।
গ্রেফতারকৃত পল্লী চিকিৎসক পাশর্^বর্তী বামনা উপজেলার দক্ষিন ডৌয়াতলা গ্রামের হাসেম আলী হাওলাদারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, গত ২৮ নভেম্বর উপজেলার টিয়ারখালী গ্রামের মজনু হাওলাদারের ছেলে হানিফ হাওলাদার প্রতিবেশী কিশোরী দরিদ্র কিশোরী হেলেনা আক্তারকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরে লোকলজ্জার ও ধর্ষকের হুমকীর ভয়ে মেয়েটি ঘটনাটি গোপন রাখে। পরবর্তীতে ধর্ষিতা কিশোরী মাসিক বন্ধ হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপ অভিযুক্ত ধর্ষক ও তার মা জাহানারা বেগম দরিদ্র ওই কিশোরীকে নিয়ে পার্শবর্তী বামনা উপজেলার দক্ষিণ ডৌয়াতলা মদিনা বাজারের আলিফ মেডিকেল হলের মো. আলমগীর হাওলাদার নামের এক গ্রাম্য ডাক্তারের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটায়। এতে মেয়েটির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সে আরও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পরে স্থানীয় প্রভাবশালী সাবেক ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান ইরান ও নুরুন্নবী মুসুল্লী ধর্ষণের ঘটনা ঘটানাটি ধামাচাপা দেওয়ার নানা অপচেষ্টা চালায়। পরে মেয়েটির অবস্থা গুরুতর হলে তাদের পরামর্শে গত ৪ জানুয়ারি কিশোরী হেলেনাকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানাস্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দিনগত ভোর রাতে ওেই কিশোরীর মৃত্যু।
এর পর পরিবারের স্বজনরা গ্রামের বাড়িতে নিহত হেলেনার লাশ নিয়ে আসলে ধর্ষণের ঘটনা ও গর্ভপাতের মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানি হয়। অভিযুক্ত প্রভাবশালীরা দরিদ্র ওই কিশোরীর অপমৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নানা অপচেষ্টা চালায়। পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে নিহত ওই কিশোরীর বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক ও পল্লী চিকিৎসকসহ ৫জনকে আসামী কওে নিহত কিশোরীর দিনমজুর বাবা মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শওকাত আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্তরা এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা অপচেষ্টা চালায়। পরে তদন্ত করে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে আইনি সহায়তা দিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা মর্গে পাঠানো হয়। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।